সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন প্রণীত ২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রিপোর্ট

২০১৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক কারণে ৩৯টি খুন, ১৫ অপহরণ, ১৯ ধর্ষণ ও ৫৬ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে

fec-image

২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে তথা তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে রাজনৈতিক কারণে ৩৯টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে আহত হয়েছে আরো ৬৭জন। এসময় অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১৫টি, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৯টি। এসময়ে ৫৬টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৫৯৫ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে তথা তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে রাজনৈতিক কারণে ৩৯টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে আহত হয়েছে আরো ৬৭জন। এসময় অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১৫টি, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৯টি। এসময়ে ৫৬টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৫৯৫ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গবেষণা সংস্থা সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন পার্বত্য চট্টগ্রামের ২০১৯ সালের আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক অর্ধবার্ষিক রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রণীত এই রিপোর্ট সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাসে রাজনৈতিক কারণে সংঘটিত পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত ৩৯টি খুনের ঘটনার মধ্যে ৩৮টি ঘটেছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যকার অভ্যন্তরীণ ও আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে এবং ১টি ঘটনা ঘটেছে জাতীয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ-বিএনপি দ্বন্দ্বের কারণে।

আঞ্চলিক রাজনৈতিক কারণে সংঘটিত খুনের ঘটনাগুলোর মধ্যে উপজাতি কর্তৃক উপজাতি খুনের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি, বাঙালি কর্তৃক বাঙালি খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩টি এবং উপজাতি কর্তৃক বাঙালি খুনের ঘটনা ঘটেছে ৯টি। তবে এসময়ে বাঙালি কর্তৃক কোনো উপজাতি খুনের ঘটনা ঘটেনি।

একই সময়ে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১জন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭জন, বজ্রপাতে ৩জন, পানিতে ডুবে ২০জন নিহত হয়েছে। এ সময়ে আত্মহত্যা করেছে ১১জন। এ ছাড়াও এসময়ে অজ্ঞাত বা অসণাক্ত কারণে ২৯জন নিহত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাসে আঞ্চলিক রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে আহত ৬৫ জনের মধ্যে উপজাতি কর্তৃক উপজাতি ১৪জন, বাঙালি কর্তৃক বাঙালি ৩৫জন, উপজাতি কর্তৃক বাঙালি ১৬জন আহত হয়েছে।

তবে এসময়ে বাঙালি কর্তৃক কোনো উপজাতি আহত হয়নি। একই সময়ে ভূমি ধসে ২জন, বজ্রপাতে ৫জন, পানিতে ডুবে ১জন এবং সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৯জন আহত হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত ও অন্যান্য কারণে ৩৬জন আহত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন মাসের মধ্যে মোট ১৫টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আঞ্চলিক রাজনৈতিক কারণে ৯টি এবং অজ্ঞাত কারণে ১টি এবং অন্যান্য কারণে ৫টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।

আঞ্চলিক রাজনৈতিক কারণে অপহরণের ৯টি ঘটনার মধ্যে উপজাতি কর্তৃক উপজাতি অপহরণের ঘটনা ৮টি এবং উপজাতি কর্তৃক বাঙালি অপহরণের ঘটনা ১টি ঘটেছে। এ সময়ে বাঙালি কর্তৃক বাঙালি বা বাঙালি কর্তৃক উপজাতি অপহরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, জানুয়ারি-জুন ২০১৯ সালের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৯টি। এরমধ্যে উপজাতি কর্তৃক উপজাতি ৩টি, বাঙালি কর্তৃক বাঙালি ১৫টি এবং বাঙালি কর্তৃক উপজাতি ১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও উপজাতি কর্তৃক কোনো বাঙালি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি।

২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সর্বমোট উদ্ধারকৃত ৫৬টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৫৯৫ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলির মধ্যে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ৩৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৩৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

এর মধ্যে জেএসএস ‍মূলের নিকট থেকে ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৪৬ রাউন্ড গুলি; ইউপিডিএফ মূলের কাছ থেকে ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৮৪ রাউন্ড ‍গুলি, জেএসএস সংস্কারের কাছ থেকে ১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও একই সময়ে অজ্ঞাত উৎস থেকে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৮ রাউন্ড গুলি এবং অন্যান্য উৎস থেকে ১২ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০৩২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন