৭৩০ শিশুসহ মিয়ানমারে ৬,৭০০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে: আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমারে আগস্টে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর এক মাসে অন্তত ৬ হাজার ৭’শ রোহিঙ্গা হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি দাতব্য প্রতিষ্ঠান মেদসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ে (এমএসএফ)।
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে এমএসএফ এ তথ্য জানিয়েছে। নিহতের এ সংখ্যা মিয়ানমার সরকারের উল্লিখিত সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি। মিয়ানমার সরকার সেনা অভিযানে মাত্র ৪শ’ রোহিঙ্গার প্রাণহানির তথ্য দিয়েছে।
এমএসএফ বলছে, হাজার হাজার রোহিঙ্গার প্রাণহানি থেকেই মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ব্যাপক সহিংসতা চালানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী “সন্ত্রাসবাদী”দের ওপর সহিংসতার দায় দিয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করছে।
এমএসএফ’এর তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট থেকে ৬ লক্ষ ৪৭ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।সংস্থাটির জরিপে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তত ৯ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে মারা যায়। এর মধ্যে অন্তত ৬ হাজার ৭’শ মৃত্যুর কারণ সহিংসতা, যার মধ্যে পাঁচ অথবা তার চেয়ে কম বয়সের শিশু ছিল ৭৩০ জন।
পাঁচ বছরের কম বয়সী যেসব শিশু নিহত হয়েছে তাদের ৫৯ শতাংশকেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৫ শতাংশকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৭ শতাংশ শিশুকে। আর ২ শতাংশ শিশু নিহত হয়েছেস্থলমাইন বিস্ফোরণে।
তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিহতের সংখ্যা প্রায় ৪০০ উল্লেখ করে এদের বেশিরভাগই ‘মুসলিম সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করেছে। লক্ষাধিক শরণার্থী ফিরিয়ে নেবার ব্যাপারে নভেম্বরে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এমএসএফ বলছে এই চুক্তি ‘বেশি আগে করে ফেলা’ হয়েছে। তারা বলছে এখনও রাখাইন থেকে পালিয়ে আসছে শরণার্থীরা। এমনকী এখনো সেখানে সহিংসতা অব্যাহত থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা বলছে রাখাইনে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনাকারীদের চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা এখনও রয়েছে।
এমএসএএফ এর মেডিক্যাল ডাইরেক্টর সিডনি ওং বলেছেন, নিহতের এ পরিসংখ্যানে পুরো চিত্র উঠে আসেনি। কারণ, সব রোহিঙ্গার ওপর জরিপ চালানো সম্ভব হয়নি। তাছাড়া, সব রেহিঙ্গা পরিবারও মিয়ানমার থেকেপালিয়ে আসার সুযোগ পায়নি। ফলে ওই হিসাবও জরিপে উঠে আসেনি।
সূত্র: south asian monitor