৭ বছর পর দীঘিনালা উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন; সভাপতি পদ বাদে অন্যান্য পদে একাধিক প্রার্থী

fec-image

আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। প্রায় ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বেড়েছে প্রাণচাঞ্চল্য এবং সাংগঠনিক তৎপরতা।

অন্যদিকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়। বিভিন্ন পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকা ঘুরে ভোটারদের নিকট ভোট এবং দোয়া চাচ্ছেন। সর্বশেষ গত ২০১২ সালের ৬ অক্টোবর দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবারের সম্মেলন এবং কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ( প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদা সম্পন্ন) বাবু কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। এছাড়া জেলার বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটের এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।

অন্যদিকে বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেম এখনো নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেননি। যার ফলে তাঁকে সম্মান ও সমর্থন জানিয়ে কেউ কোন প্রকার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকেই  তাকে পুনরায় সভাপতি দাবী করছে। অনেকে সমর্থন জানিয়ে টানান ব্যানার ফেস্টুন। সে হিসেবে তিনি এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ বরণ চাকমা, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ৩ নং কবাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রৌশন আলী ভূইয়া, নিউটন মহাজন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ১নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রহমান কবির রতন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ মাহবুব আলম।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বিল্লাল, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা দীপঙ্কর নারায়ন ত্রিপুরা, যুবলীগ নেতা মোঃ সোলায়মান, ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক, মনিরুল ইসলাম ফরাজী, আবদুর রহমান মেম্বার, আবদুল বারেক এবং ঘনশ্যাম ত্রিপুরা।

এ ব্যাপারে কবাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মফিজুর রহমান জানান, দীঘিনালা উপজেলায় বেশ কিছু উন্নয়ন চলমান। অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে বর্তমান সভাপতিকে আবারো প্রয়োজন। এ ছাড়া দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামী লীগে এখনো উনার মতো যোগ্য নেতৃত্ব এখনো গড়ে উঠেনি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রৌশন আলী ভূঁইয়া জানান, সবগুলো প্রার্থীর নীতি নৈতিকতা বিবেচনা করে আমি ভোটারদের নিকট ভোট দিতে বলেছি এবং ভোট চেয়েছি। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবো।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ বরণ চাকমা জানান, বর্তমানে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে কারো সাথে মতপার্থক্য হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে না। জেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কাউন্সিলে যে সিদ্ধান্ত নিবেন, দলের স্বার্থে তা মেনে নেবো।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মাহবুব আলম জানান, বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেম ভাই সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারি। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শন করেই আমি এখনো প্রার্থীতা ঘোষণা করিনি।

এ ব্যাপার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেম জানান, সম্মেলন এবং কাউন্সিলের পুরোপুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথম অধিবেশনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের পর দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কাউন্সিল সম্পন্ন করা হবে।

এবারের সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটির ৬৭ জন, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন কমিটির ৩১টি করে ১শত ছিয়াশি এবং কো অপশন ভোটার ১৫ নিয়ে মোট ২ শত ৬৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ, দীঘিনালা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন