parbattanews

অজ্ঞাত রোগে মাদ্রাসার পর আক্রান্ত এবার রামগড়ের স্কুল ছাত্রীরা: আতঙ্কিত বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও

20160904_132309 copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অজ্ঞাত রোগ থেকে মুক্তি মিলছেনা খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর। বিশেষ করে ছাত্রীদের পিছু ছাড়ছেনা অজ্ঞাত রোগ। গত ৩০ আগষ্ট রামগড় গনিয়াতুল আলিম মাদ্রাসার ৩২ জন ছাত্রী আক্রান্ত হওয়ার ৫ দিনের মাথায় এবার অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছে রামগড় বালিকা বিদ্যালয়ের ৭ জন ছাত্রী। রবিবার দুপুরে ক্লাশ চলাকালীন সময়ে একে একে ৭ জন ছাত্রী হঠাৎ করে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাদের প্রথমে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা, হাত ও পায়ে খিঁচুনি ভাব দেখা দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ার উপক্রম হয়। সাথে সাথে তাদের রামগড় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরা হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর তানজিনা আক্তার, সাজেদা আক্তার, ৭ম শ্রেনীর ইয়াছমিন আক্তার, সাজেদা আক্তার, ফারজানা আক্তার, মনি ও ১০ম শ্রেনীর জান্নাতুল ফেরদৌস।

পর পর রামগড়ের দুটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে অজ্ঞাত রোগটি দেখা দেয়ায় উপজেলার অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতংক। বিশেষ করে অভিভাবকরা হয়ে পড়ছেন উদ্বিগ্ন।

এদিকে গত কিছুদিন যাবত এই রোগে আক্রান্ত হওয়া ছাত্রীদের চিকিৎসা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সর্বত্র। আক্রান্ত হওয়া ছাত্রীদের কয়েকজন অভিভাবক বলেন, মেয়েরা কি রোগে আক্রান্ত তা আমরা এখনো জানতে পারছিনা। প্রয়োজনীয় টেষ্টও এ পর্যন্ত করা হয়নি। একটু সুস্থ্য হলে বাড়ীতে নেয়ার পর আবারও রোগটি দেখা দেয়। আবারও হাসপাতালে ভর্তি করি। তাদের অভিযোগ সঠিক রোগনির্ণয় করা হচ্ছেনা। রোগ নির্নয়ে ও চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত তা না করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।  তারা আরো জানান, অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসায় বাহিরে নেয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা।

রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা অজ্ঞাত রোগটিকে গণমনোত্বাত্ত্বিক রোগ বলে চিহ্নিত করেছি এবং সেভাবে চিকিৎসাও চলছে। এ রোগটি মূলত আতঙ্কিত বা ভয়ভীতি থেকে ছড়ায়। অভিভাবকদের অভিযোগের উত্তরে তিনি বলেন, ছাত্রীদের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সাথে সাথে জানানো হয়েছে। পর্যাপ্ত ঔষুধ না থাকা প্রসঙ্গে তিনি জানান, কিছু ঔষুধের সল্পতা আছে তা রোগীরা নিজেরা নিয়ে আসছেন।

এদিকে আকস্মিকভাবে ছাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায় আতংক ছড়িয়ে পড়ায় রামগড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও গণিয়াতুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্রীদের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম নিজামী জানান, উপজেলা নির্বাহি অফিসারের নির্দেশে মাদ্রাসায়  সব ক্লাসের শুধু ছাত্রীদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঈদুল আযহার পর যথারীতি শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হবে। একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও।

নতুন করে আক্রান্তের খবর পেয়ে রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বালিকা বিদ্যালয়ে ছুটে যান এবং ছাত্রীদের চিকিৎসার খবরাখবর নেন। সদ্য গঠিত তদন্ত কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে  রির্পোটটি জমা দেয়ায় কথা রয়েছে।

এদিকে বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতির কারনে বিদ্যালয়টি কয়েকদিনের জন্য বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্যদেরকে হিমশিম খেতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই দুইজন কর্মকর্তা মাসের বেশীর ভাগ সময় অফিসে থাকেন না।

Exit mobile version