parbattanews

অধিকার আদায়ের দাবিতেও বিভক্ত রোহিঙ্গারা, বিচ্ছিন্ন ভাবে সমাবেশ

অধিকার আদায়ের দাবিতে অনুষ্টিত সমাবেশে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ উপস্থিত হয়নি

মিয়ানমার সেনা, বিজিপি, রাখাইন উগ্রবাদীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ২ বছর পূর্বে আগস্টের ২৫ তারিখ রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে আসে এদেশে। রোহিঙ্গা সংকটের ২ বছর পূর্ণ হয় আজ রবিবার। এই উপলক্ষ্যে রোহিঙ্গা দিনটিকে গণহত্যা কালো দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করে এক মহাসমাবেশের আয়োজনের ডাক দেন রোহিঙ্গা নেতারা। ৫ দফা দাবিসহ অধিকার আদায়ের দাবিতে অনুষ্টিত সমাবেশে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ উপস্থিত হয়নি। তাদের বিচ্ছিন্নভাবে সমাবেশ করতে দেখা গেছে।

এ নিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং এক্স-৪ ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত হয়ে দেখা যায়, রোহিঙ্গাদের একটি অংশ মঞ্চে উপস্থিত নেই। কারণ সম্পর্কে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাম সর্বস্ব কিছু সংগঠন রয়েছে। যে গুলো কতিপয় রোহিঙ্গা নেতা ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। মূলতঃ এ সব সংগঠনের কোন অস্থিত্ব নেই বললেও চলে। এক্স-৪ ক্যাম্প মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশের নেতৃত্বে ছিল আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামের সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ, উক্ত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ উল্লাহ, রোহিঙ্গা নেতা নূর হাকিম, মো. কামাল, আবদুর রহিম, নারীনেত্রী হামিদা বেগম প্রমুখ। কিন্তু তাকে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ পছন্দ না করায় তারা আলাদা ভাবে সমাবেশ করেছে।

একই সময়ে উখিয়ার কুতুপালং ডি-৫ ব্লকে রোহিঙ্গা রিফুউজি কমিটি (আরআরসি) সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা জানান, আমরা ক্যাম্প এক্স-৪ এর সমাবেশে অংশ গ্রহণ করিনি। ডি-৫ ব্লকে বিশাল জমায়েত করে সমাবেশ করেছি। এই সমাবেশে ডাঃ জাফর আলম ডিপুসহ বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ১৭ নং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা স্টুডেন্ট সোসাইটির নেতৃত্বে একটি সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গা যুবকেরা। এতেও অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা উপস্থিত হন।

বালুখালীতে এফআরসি এবং ভয়েচ অব রোহিঙ্গা নামের ২টি সংগঠনের ব্যানারে রোহিঙ্গারা সমাবেশের আয়োজন করলেও শেষ পর্যন্ত অনুমতি না পাওয়া সমাবেশ করতে পারেনি রোহিঙ্গারা। পৃথক পৃথক সমাবেশের আয়োজন করলেও তাদের দাবি ছিল ৫টি।

রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে মিয়ানমারকে। সঙ্গে রাখাইনে ফেলে আসা ভিটেমাটিও ফিরিয়ে দিতে হবে। তাহলেই প্রত্যাবাসন সফল হবে।

২০১২ সালে ১ লাখ ২৮ হাজার রোহিঙ্গাকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে যে আশ্রয়শিবিরে রাখা হয়েছে, তাদেরও নিজ নিজ বাসস্থান ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয় সমাবেশে। সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে সমাবেশ শেষ হয়। এরপর রোহিঙ্গারা দলে দলে শিবিরে ফিরে যায়। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, রোহিঙ্গারা ২৫ আগস্ট উপলক্ষ্যে ক্ষুদ্র পরিসরে সমাবেশ করেছে। তবে এতে কোন প্রকার উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলা হয়নি। আর সমাবেশের আশেপাশে আইনশৃংখলাবাহিনীর মোতায়েন ছিল যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Exit mobile version