parbattanews

অবশেষে ত্রাণ নিল লামার সেই ৩৬ পরিবার

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের মেরাইত্যা নয়াপড়ার ৩৬ পরিবার উপজেলা প্রশাসনের দেয়া ত্রাণ গ্রহণ করেছে।

এ সময় ত্রাণ নিতে আসা লাংকম মুরুং পাড়ার (নতুন পাড়ার) লাং কম মুরুং পার্বত্য নিউজের এই প্রতিবেদককে জানান, আমার মন ভালো ছিলনা তাই রোববারে উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ গ্রহণ করিনি। আমরা ভুল করেছি এবং অনুতপ্ত।

সোমবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় সরই ইউনিয়নের মেরাইত্যা লাংকম ম্রো পাড়া, রেংওয়াং ম্রো পাড়া ও হয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়ার ৩৬ পরিবার লামা উপজেলা পরিষদে দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করেছে। লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার এসব পাড়ার লোকজনের নিকট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় ত্রাণ নিতে আাসা সংলে ম্রো (৪০) (মেরাইত্যা লাংকম পাড়া) বলেন, আমরা ত্রাণ পেয়ে খুশি

হামমতি ত্রিপুরা (৫০) (জয়চন্দ্র ত্রিপুরা) পাড়া বলেন, আমরা জয়চন্দ্র ত্রিপুরায় আসছি ৭ বছর হবে। আগে কাঁঠালছড়া ত্রিপুরা পাড়ায় ছিলাম।

রুইপাও ম্রো (৩০) (লাংকুম পাড়া) বলেন, ওদিন আমরা ভেবেছি এগুলো লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের সহায়তা। তাই গ্রহণ করেনি।

বুইলি ম্রো (৩৫) (লাংকুম পাড়া) বলেন, আগুনে আমার আনারস ও মিশ্র ফলের বাগান পুড়ে গেছে। ঋণ করে আমরা বাগান করেছি। লামা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে খাদ্য সহায়তা দেয়ায় আমরা খুশি। এইভাবে আমরা প্রশাসনকে পাশে চাই।

লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল বলেন, ত্রাণ নেয়ার জন্য গাড়ি রিজার্ভ করে দেয়া হয়েছে। এই তিনটি পাড়ার লোকজনের পাশে আমরা আছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, ত্রাণসামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে দিতে পেরে আনন্দিত। জেলা প্রশাসনের পক্ষে আমি ত্রাণসামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের হাতে তুলে দিয়েছি। প্রতি পরিবারকে চাল ১০ কেজি, ডাল ৫০০ গ্রাম, লবণ ৫০০ গ্রাম, পানি বোতল ২ লিটার, মুড়ি ১ কেজি, চিড়া ১ কেজি দেয়া হয়েছে। আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য যে, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক পক্ষের সাথে তিনটি পাড়ার ৩৬ পরিবারের ভূমি বিরোধ চলে আসছে। ২০১৬ সাল থেকে মেরাইত্যা এলাকায় নতুন করে তিনটি পাড়া গড়ে উঠে। এই পাড়াগুলো হলো রেংওয়েন মুরুং পাড়া, লংকম মুরুং পাড়া, মেরাইত্যা নতুন ত্রিপুরা পাড়া। রেংওয়েন মুরুং পাড়ায় ১০ পরিবার, লংকম মুরুং পাড়ায় ১০ পরিবার ও মেরাইত্যা নতুন ত্রিপুরা পাড়ায় ১৬ পরিবার বসবাস করে।। নতুন পাড়া স্থাপন করে নতুন বসতি গড়ে উঠলে তখন থেকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের সাথে ভূমি বিরোধ শুরু হয়।

সম্প্রতি এক অগ্নিকাণ্ডের বিতর্কিত ভূমির বাগান পুড়ে যায় তাদের। পাড়াবাসী এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজকে দায়ী করছে। এই ঘটনার মামলায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির ম্যানেজার ও অপর একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুমোতি দিয়েছে আদালত।

Exit mobile version