অশনি’র প্রভাব নেই সৈকতে, আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা

fec-image

ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাব এখনো পড়েনি সৈকতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কিছুটা বেড়েছে সাগরের পানি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। সমুদ্র বন্দরগুলোকে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ট্রলার কক্সবাজারের বাঁকখালী ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ জানান, ‘সমুদ্র এখন উত্তাল রয়েছে। ইতোমধ্যে সাগরে থাকা মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে কূলে চলে আসতে বলা হয়ছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরণের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে, সোমবার (৯ মে) কক্সবাজার সাগর পাড়ে প্রচুর পর্যটক সমাগম ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তেও আনন্দে ভাটা পড়েনি। লোনাজলে গোসল সেরেছে, আনন্দ করেছে পর্যটকেরা। আতঙ্কের ছাপ চোখে পড়েনি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ বলছেন, ঈদের সরকারি ছুটি শেষ হওয়ার পরও অর্ধলাখের বেশি পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছে। তাই, বরাবরের মত স্থানীয় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীর সমন্বয়ে পর্যটকদের সতর্ক বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অর্ধলাখ পর্যটক ভিড় জমিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে দিনব্যাপী মেঘলা আকাশ, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে যাচ্ছে এসব পর্যটকরা।

সৈকতে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গোসল শেষে তীরে উঠে আসা একটি বেসরকারি সংস্থা চাকরিরত সাইফ ইবনে নুর জানান, ‘দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উত্তাল সাগরের বিষয়টি তিনি জানেন না। এমনকি কোন সতর্ক বার্তাও তিনি পাননি। তাই, স্বপরিবারে গোসলে নেমেছেন।’

ঢাকা মোহাম্মদপুর থেকে আসা নারী পর্যটক ইয়াসমিন ফারিয়া জানান, ‘দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গোসলরত পর্যটকদের সতর্ক করা উচিত। কারণ, উত্তাল সাগরে যেকোন সময় অঘটন ঘটতে পারে’।

সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দায়িত্বরত লাইফগার্ড কর্মী আব্দু শুক্কুর জানান, অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন সাগর খুব উত্তাল রয়েছে। একারণে গোসলরত পর্যটকদের সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু, অধিকাংশ পর্যটক সতর্ক বার্তা মানছে না। এতে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিচ কর্মী মাহবুবুর রহমান জানান, আমরা বিচকর্মীরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনিরাপদ জোনে গোসল না করার জন্য মাইকিং করছি । পানিতে নেমেও সতর্ক করা হচ্ছে। উৎসুক পর্যটকেরা কোন নির্দেশনা মানছেন না। তবে তারা নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে অবস্থান করছেন। তাই এখন পর্যন্ত কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। দুর্ঘটনা এড়াতে আমরা সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

ট্যুরিস্ট কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, কক্সবাজার সমুদ্রে ২নম্বর সতর্ক সংকেত ঘোষণার পর ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক সজাগ রয়েছে। যেন পর্যটকরা গভীর পানিতে নেমে গোসল কিংবা ওয়াটার বাইক না চালান। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকার কারণে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন