parbattanews

অস্থায়ী শিবিরে ৩০ হাজার রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনের আয়োজন মিয়ানমারের

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রাখাইন রাজ্যের সহিংসতা থেকে পালিয়ে যাওয়া ৩০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমের সাময়িক আবাসনের জন্য একটি ক্যাম্প নির্মাণ করছে মিয়ানমার। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা শুরুর প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া সোমবার (১৫ জানুয়ারি) এ খবর প্রকাশ করেছে।

গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হামলার জবাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী পাল্টা আক্রমণ চালালে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ একে জাতিগত নির্মূল বলে অভিহিত করেছে, তবে মিয়ানমার এ অভিযোগ অস্বীকার করছে।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ২৩ নভেম্বরের চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সোমবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে আলোচনায় বসে। চুক্তিটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের এটিই প্রথম সভা।

রাষ্ট্র-পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার পত্রিকায় বলা হয়, উত্তর রাখাইনের হ্লা পো খাউনে প্রত্যাবাসনে রাজি লোকদের জন্য সাময়িকভাবে রাখার জন্য একটি শিবির নির্মাণ করা হবে।

হ্লা খাউনের ১২৪ একর স্থানে ৬২৫টি ভবনে প্রায় ৩০ হাজার লোককে রাখা হবে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ প্রায় ১০০টি ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হবে।

মিয়ানমারের ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইসেস ফর হিউমেনিটেরিয়ান অ্যাসিসট্যান্স, রিসেটলমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর প্রধান সমন্বয়কারী অং তুন থেট রয়টার্সকে বলেছেন, হ্লা পো খাউন হবে ‘সাময়িক আবাসন’ স্থান। পরে তাদের যেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, সেখানে কিংবা তার কাছাকাছি জায়গায় পুনর্বাসন করা হবে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারে ফিরতে আগ্রহী সবাইকে আমরা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। ফেরত আসাদের যাচাই করতে তাদেরকে হ্লা পো খাউন শিবিরে আসার আগে তাউংপিলেতওয়ে বা নগাখুয়ার ক্যাম্পে রাখা হবে।

মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনঃবসতিবিষয়ক মন্ত্রী সো অং বলেন, ফেরত আসরা তাদের নতুন বাড়ি নির্মাণের আগে পর্যন্ত হ্লা পো খাউনে এক বা দুই মাস থাকবে।

ফিরে আসাদের কতজনকে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে তা অস্পষ্ট। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিয়ানমারে পূর্বপুরুষেরা বাস করত, এমন প্রমাণ দেখাতে পারলে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে। কিন্তু ১৯৯২ সালের মতো করা সর্বশেষ চুক্তিতে নাগরিকত্ব প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়নি।

মিয়ানমার সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, যারা তাদের বর্তমান পরিচিতিমূলক নথিপত্র দেখাতে পারবে, তাদেরই গ্রহণ করা হবে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার বরবারই রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তারা তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসেবে অভিহিত করে আসছে।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম দফার উদ্বাস্তুরা ঠিক কখন ফিরতে পারবে, তা তারা স্পষ্টভাবে জানেন না।

জাতিসংঘ সংস্থাগুলো পুনঃবসতি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার জন্য আরো স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণের দাবি জানিয়েছে।

 

সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর

Exit mobile version