আলমগীর মানিক,রাঙামাটি:
পাহাড়ে চাদাঁ আদায়ের রশিদ ও আদায়কৃত চাদাঁর নগদ টাকাসহ পিন্টু ত্রিপুরা (২৬) নামে এক চাদাঁবাজকে সস্ত্রীক আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছে বাঘাইহাট জোনের ১৭ বীরের অধীনস্থ মাচালং আর্মি ক্যাম্পের একটি টহল দল। পরে শুক্রবার সকালে নবগঠিত মাচালং থানা ঘেরাও করে আটককৃত আসামীদ্বয়কে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। তবে ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে প্রদত্ত প্রেস বার্তায় জানানো হয়েছে যে, আটককৃতদের সাজেক নারী সমাজের আন্দোলনের মুখে জনপ্রতিনিধির জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, স্থানীয় ইউপিডিএফ কর্মী পিন্টু ত্রিপুরার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকদিন যাবৎ বেপরোয়াভাবে চাদাঁবাজির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। এছাড়া এলাকায় পিন্টু ত্রিপুরা ইউপিডিএফের চাদাঁ কালেক্টর হিসেবেও পরিচিত। পরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে বারোটার সময় পিন্টুকে আটক করতে অভিযান পরিচালনা করে মাচালং আর্মি ক্যাম্পের একটি টহল দল। আর এই টহল দলের নেতৃত্বে ছিলেন সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার নজরুল ইসলাম। পরে গভীর রাতে স্থানীয় একটি বাসা থেকে পিন্টু ও তার স্ত্রীকে সঙ্গে থাকা আদায়কৃত চাদাঁর টাকা ও চাদাঁ আদায়ের রশিদ বইসহ আটক করে। পরে তাকে চলতি মাসের ৮ই সেপ্টেম্বর গঠিত মাচালং থানায় হস্তান্তর করা হয়। পিন্টু ত্রিপুরা দিঘীনালা থানার ভারতমনি ত্রিপুরার সন্তান বলে জানা গেছে।
পিন্টুকে ছাড়িয়ে নেবার জন্য সাজেক নারী সমাজের নেত্রী নিরূপা চাকমার নেতৃত্বে শতাধিক উপজাতীয় গ্রামবাসি নবগঠিত থানা (সেখানে এখনো কোনো এসআই দেওয়া হয়নি, আছে শুধুমাত্র কনষ্টেবল ও ওসি) ঘেরাও করে হাজতখানা থেকে আসামীদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট বাহিনীর স্থানীয় একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, ঘটনার সময় পুলিশ নিরূপায় হয়ে থানা থেকে মাত্র শতাধিক দূরে আর্মি ক্যাম্পে ঘটনাটি জানায়। পরে সেনাবাহিনীর আসার আগেই আসামীদ্বয়কে নিয়ে চলে যায় নারী সমাজের নেতাকর্মীরা।
এদিকে মাচালং থানায় অফিসার ইনচার্জ এসএম আজিজুল হকের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য ফোন রিসিভ করে জানান, সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রদত্ত আসামীদ্বয়কে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির হাতে জিম্মায় দেওয়া হয়েছে এমনটা আমি জানি এর বেশি কিছু জানিনা।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, ইউপিডিএফ সদস্য পিন্টু ত্রিপুরাকে আটকের প্রতিবাদে মাচালং বাজারে শুক্রবার সাপ্তাহিক হাট বার হওয়া সত্ত্বেও ভোর থেকে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বাজার বয়কট করে স্থানীয় পাহাড়িরা। পরে পিন্টুকে ছাড়িয়ে নেবার খবর পাওয়া গেলে তারপর বাজার বসতে শুরু করে।
অপরদিকে ইউপিডিএফ’র বাঘাইছড়ি উপজেলা ইউনিটের সংগঠক সমশান্তি চাকমা এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বিনাকারণে এ ধরনের ধরপাকড় ও নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধেরও দাবি জানান। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুরুব্বী ও সাজেক নারী সমাজের নেতা-কর্মীরা থানায় গিয়ে পিন্টু ত্রিপুরাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য থানা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়। পরে এলাকাবাসীর চাপের মুখে পুলিশ পিন্টু ত্রিপুরাকে ছেড়ে দেয়।