আন শহরও আরাকান আর্মির দখলে, রাখাইন প্রদেশে আরও শক্তিবৃদ্ধি বিদ্রোহীদের


বাংলাদেশের টেকনাফ লাগোয়া মংডু শহর আগেই বিদ্রোহীদের দখলে গিয়েছিল। এবার সেই প্রদেশের আরও একটি শহর দখল করল আরাকান আর্মি। আর সেই শরেই ছিল মায়ানমারের জুন্তা সরকারের সামরিক কমান্ড।
মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের আন শহরও পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। বিদ্রোহীরা এক বিবৃতি প্রকাশ করে এমনই দাবি করেছে। এর আগে বাংলাদেশের টেকনাফ লাগোয়া মংডু শহরটি দখল করেছিল আরাকান আর্মি। এবার মধ্য রাখাইনের এই আন শহরটি দখল করল বিদ্রোহীরা। জানা গিয়েছে, এই আন শহরেই মায়ানমারের জুন্তার আঞ্চলিক সেনা সদর দফতর ছিল।
এই নিয়ে দ্বিতীয় কোনও আঞ্চলিক সামরিক কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ হারাল ক্ষমতাসীন জুন্তা। এর আগে গত অগস্টে চিন সীমান্তবর্তী শান প্রদেশের রাজধানী লাশিওতে অবস্থিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল বিদ্রোহীরা। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইনে জুন্তা বাহিনীর ঘাঁটি নিশানা করে হামলা শুরু করেছিল আরাকান আর্মি। এই আবহে রাখাইন প্রদেশের ১৭টি শহরের মধ্যে ১২টিরই দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি।
একটি বিবৃতিতে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা সংবাদমাধ্যম ইরাবতীকে জানিয়েছেন, রাখাইন প্রদেশে পুরো ওয়েস্টার্ন মিলিটারির সদর দফতর দখল করে নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ডেপুটি রিজিওনাল কমান্ডার জেনারেল থাউং তুন এবং জেনারেল কেয়ো কেয়োকে। সেইসঙ্গে মিলিটারি কাউন্সিলের যে জওয়ানরা পালিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের তাড়া করে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। এর আগে মংডু শহর দখলের সঙ্গে সঙ্গেই সেই ২৭০ কিলোমিটারের পুরোটাই দখলে চলে গিয়েছে আরাকান আর্মির। বর্তমানে রাখাইন প্রদেশের সিত্তে শহরটি জুন্তার দখলে রয়েছে। তবে প্রদেশের অধিকাংশের ওপরই জুন্তার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। এদিকে রাখাইন প্রদেশে এখনও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা আছে বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে রোহিঙ্গারা আপাতত জুন্তাকে সমর্থন করছে।
এদিকে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে অনেক রোহিঙ্গা দেশে ফিরে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। আবার আরাকান আর্মিও নাফ নদের তীরে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই আবহে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে ৮০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস নিজে। এই পরিস্থিতিতে টেকনাফ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তে বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।