আরাকান আর্মির নৌ হামলায় নিহত মিয়ানমারের দুই সৈন্য
মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি টাগবোটে হামলা চালিয়ে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর (তাতমাদাও) দুই সদস্যকে হত্যা করেছে আরাকান আর্মি। রাখাইন রাজ্যের সিত্তুইর কাছে সেত ইয়ো কিয়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এই প্রথম রাজ্যের কোনো নৌবাহিনীর জাহাজে হামলা হলো। তাতমাদাওয়ের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন ইরাবতীকে বলেন, হামলায় দুজন নিহত ও একজন আহত হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা উপকূল থেকে গুলি করে। লুকাইয়ের [স্বপরিচালিত শান রাজ্যের কোকাঙের রাজধানী] হামলায় এ ধরনের রকেট ব্যবহৃত হয়। টাগবোটটিরও কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ২২ জুন ভোর সাড়ে তিনটার দিকে হামলাটি হয়। আরাকান আর্মির সদস্যরা রকেট নিক্ষেপ করে।
কমান্ডার ইন চিফের অফিস থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাসিতে একটি টাইপ-৬৩ এমএম রকেট, ওয়ারিং, রকেটে ব্যবহৃত দুটি ব্যাটারি পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, সিত্তুইর বিপরীতে থাকা খাড়ির কাছে কিয়া তাও ইয়া মা গ্রামে একটি রকেট গিয়ে পড়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা উ জাও মঙ থিন বলেন, তারা যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন এটি আঘাত হানে। কোন পক্ষ তা করেছে, তা তারা জানে না।
কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করতে বাড়ি বাড়ি তল্লাসি চালাচ্ছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। এর আগে এখানে কোনো সঙ্ঘাত হয়নি।
নভেম্বর থেকে আরাকান আর্মির সাথে সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে প্রায় ৪০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে ডিসেম্বরের পর এবারের জুনেই সবচেয়ে কম সংঘর্ষ হয়েছে। এর কারণ হতে পারে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ওই এলাকায় অভিযান স্থগিত করেছে। এ দাবি করেছে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইঙ থুখা।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিন তুন জুনে কোনো সঙ্ঘাত না হওয়ার কথা বলেন। তবে তিনি দাবি করেন, সামরিক বাহিনী ব্যাপক সাফল্য লাভ করার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
থাখার হিসাব অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে মধ্য জুন পর্যন্ত মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ১২ শ’ সদস্য হতাহত হয়েছে। এরে মধ্যে জানুয়ারিতে ৮৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯২ জন, মার্চে ২২০ জন, এপ্রিলে ২৫৪ জন, মেতে ৪৯০ জন রয়েছে। তবে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এই তথ্য স্বীকার করেনি।
২১ ডিসেম্বর থেকে ৮ জুন পর্যন্ত ২৩৭টি সংঘর্ষ হয়েছে। প্রতিটির স্থায়িত্ব ছিল ৩০ মিনিটের বেশি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক সংঘর্ষ হয়েছে মে মাসে, ৬৫টি।
সূত্র: সাউথএশিয়ানমনিটরডটকম