parbattanews

‘আরাকান আর্মির’ হামলায় মিয়ানমারের ৭ পুলিশ নিহত

ডেস্ক রিপোর্ট:

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাত পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী আরাকান আর্মি। শুক্রবার মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে পুলিশের চারটি চেক পোস্টে এ হামলা হয়। খবর রয়টার্স ।

আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের সদস্যরা চারটি পুলিশ পোস্টে আক্রমণ করেছে। পরে ‘শত্রুর’ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি জানান, মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আমরা তাদের ক্ষতি করব না।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তাদের সদস্যদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আগ্রাসনের জবাবে এই হামলা চালানো হয় বলে জানান আরাকান আর্মির মুখপাত্র।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ মিন তুন রয়টার্সকে বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মংডু ও বুথিডং শহরের উত্তরাংশে পুলিশ পোস্টগুলোতে শুক্রবারের এই হামলার পাল্টায় ব্যবস্থা নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত মাসেই দেশটির উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সাথ শান্তি আলোচনা শুরুর জন্য চার মাস লড়াই বন্ধের কথা জানিয়েছিলো। যদিও রাখাইন এর আওতায় ছিলোনা।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মঙ্গলবারেও একই গোষ্ঠীর হাতে আরেকটি হামলার খবর দিয়েছিলো।

সেনা মুখপাত্র ঝাও মিন তুন রয়টার্সকে বলেছেন শুক্রবারের হামলার জবাব দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। যে চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা হয়েছে সেগুলো বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া।

তিনি বলেন নিরাপত্তার স্বার্থে ওই অঞ্চলে সেনা অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে কতজন এবারের হামলায় নিহত হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে রাজী হননি। তিনি বলেন ওই এলাকায় বৌদ্ধ নৃ গোষ্ঠীরা বসবাস করে এবং তারা মিয়ানমারের নাগরিক। এরা রাখাইনে থাকলেও রোহিঙ্গা নয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

ঝাও মিন তুন বলেন ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের ৭১বছর পূর্তিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কয়েক মিনিট পর থেকেই হামলা শুরু হয়।

যদিও আরাকান আর্মির খিন থু খা স্বাধীনতা দিবসের সাথে এই হামলার সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। “আমরা এখনো স্বাধীন নই। এটা আমাদের স্বাধীনতা দিবস নয়,” রাখাইনে বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওদিকে এএফপি জানায় আরাকান আর্মি রাখাইনে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন চাইছে।তাদের অভিযোগ পুলিশ পোস্টগুলোকে সামরিক বাহিনী আর্টিলারি হিসেবে ব্যবহার করছে।

“দু সপ্তাহ আগে সেনাবাহিনী পুলিশকে যুদ্ধের মধ্যে নিয়ে আসে এবং সারাদিন ধরে সামরিক হেলিকপ্টার থেকে গুলি বর্ষণ হয়েছে”।

এদিকে সম্প্রতি যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে সেটি সামরিক বাহিনী একতরফা ভাবেই করেছে।আরাকান আর্মির দাবি রাখাইনের শক্তি বৃদ্ধির জন্যই এটি করেছে সেনাবাহিনী।

যদি পর্যবেক্ষকরা নতুন করে সেনা মোতায়েনের আর কোন ইঙ্গিত পাননি বলে জানাচ্ছেন।

আবার এই রাজ্যেই গত বছর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এসব মুসলিম রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর লড়াইয়ে গত বছরের শেষে দুই হাজার ৫শত বেসামরিক নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

Exit mobile version