আলীকদমে খেলার ট্রফি ভাঙলেন ইউএনও, প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষুদ্ধদের কর্মসূচি ঘোষণা
খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের সাথে রাগ করে ফুটবল খেলার ট্রফি ভেঙে আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেরুবা ইসলাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউএনও’র ট্রফি ভাঙ্গার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এঘটনায় বর্তমানে বিষয়টি টক অব দ্যা ডিডিস্ট্রকে পরিনত হয়েছে। বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেরুবা ইসলামের বিরুদ্ধে ফুটবল খেলার ট্রফি ভাঙার অভিযোগ তুলে তাকে দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি করেছেন আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আলীকদম উপজেলার ২নং চৈক্ষং ইউনিয়নের রেপারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আবাসিক স্বাধীন যুব সমাজের উদ্যোগে জুনিয়র একাদশ বনাম রেপারপাড়া বাজার একাদশ ফুটবল টিমের অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলীকদমের ইউএনও মেহরুবা ইসলাম। খেলার সমাপনী বক্তব্যের এক পর্যায়ে হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে উপস্থিত খেলোয়াড়, অতিথি ও দর্শকদের সামনে হাতে ট্রফি তুলে নিয়ে টেবিলের সাথে আঘাত করে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ ট্রফি দুটি ভেঙে ফেলেন। এঘটনায় তাৎক্ষণিক হতবাক হয়ে যান উপস্থিত সকলে।
ট্রফি ভাঙ্গার একটি ভিডিও রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ইউএনওর এমন আচরণের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেরুবা ইসলাম মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণের সময় হঠাৎ একজন এসে বললেন যে, তিন গোল চার গোল তারা মানে না। তখন আমি বললাম, খেলা আবার হবে কিনা। তখন কয়েকজন পেছন থেকে চিৎকার করে বলতে লাগলো হলো তারা ট্রফি নেবে না। তারাই বলল, ট্রফি যতদিন থাকবে একটা আক্রোশ থাকবে। তারা বলল, ট্রফি ভেঙে ফেলা হোক। পরে আমি বললাম, তাহলে ঠিক আছে আপনারা মেডেলগুলো নিয়ে যান। তারা সেগুলোও না নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। ওরাই বলছে ট্রফিটা ভেঙে ফেলা হোক। তাই ভেঙে ফেলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম জানান,‘আমি এ খেলায় উপস্থিত ছিলাম। ফুটবল খেলার টাইব্রেকারে একটা দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। ইউএনও’র বক্তব্যকালে কেউ কেউ ‘বেড সাউন্ড’ দেয়। খেলায় অংশগ্রহণকারীরা বলেছিলেন, টাইব্রেকারে মধ্যে ত্রুটি আছে, আমরা পুনরায় খেলাটা চাই। তখন ইউএনও বক্তব্য করছিলেন। বক্তব্যের সময় ইউএনও নিজেই ট্রফিগুলো ভেঙে ফেলেন।
চেয়ারম্যান বলেন, খেলার আয়োজকরা চাঁদা তুলে ট্রফিগুলো কিনেছে। ক্রয়কৃত ট্রফি গুলোর এখনো ২৭ হাজার টাকার মতো বকেয়া আছে। এসব অনুষ্ঠানে গেলে আয়োজকদের অনেক টাকা খরচ হয়। খেলার উৎসাহ ও খেলোয়াড় তৈরিতে এরকম আয়োখেলার উৎসাহ ও খেলোয়াড় তৈরিতে এরকম আয়োজনে আমরাও সব সময় আয়োজকদের সহযোগিতা করি। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে ইউএনও কোনো সহযোগিতা না করে উল্টো ট্রফি ভেঙে দিয়েছেন। এ রকম জঘন্য কাজ করাটা উচিত হয়নি।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, এই ইউএনও দীর্ঘদিন থেকে আলীকদমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন দাবি করে তিনি বলেন, দুই দিন আগে পার্কিং করা অবস্থায় দুটি মোটরসাইকেল আনসারদের ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এটিও আমার ফেসবুকে দিয়েছি। ইউএনওর ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।গ্রামের গৃহবধূ রাগ করেই এমন আচরণ করতে দেখি! তিনি ভুলে গেছেন তিনি একজন ইউএনও। অবিলম্বে এই ইউএনওকে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় আজ (২৪ সেপ্টম্বর) শনিবার বিকাল ৩টায় আলীকদমবাসী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে ও বিকালে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।