আলীকদমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির আলোকসজ্জা নিভিয়ে দেয়ার অভিযোগ

fec-image

সারাদেশ যখন মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে তখন আলীকদম উপজেলা পরিষদ হেডকোয়ার্টারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মঙ্গলবার রাতে আলোকজসজ্জার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সায়েদ ইকবাল।

এ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সারাদিন উপজেলার বিভিন্ন স্তরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নেতাকর্মীরা বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে ইউএনও’র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি মুঠোফোনে এ ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা জানান।

বুধবার উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় বক্তারা তাদের বক্তব্যে এ ঘটনা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ইউএনও মো. সায়েদ ইকবালের এ দৃষ্টতার বিচার দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

বুধবার রাত আটটায় আলীকদম প্রেসক্লাবে উপস্থিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মংব্রাচিং মার্মা। তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর ইউএনও’র বিরুদ্ধে করা লিখিত অভিযোগের অনুলিপি জমা দেন প্রেসক্লাবে।

অভিযোগে তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ এলাকায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোকসজ্জা না করে ইউএনও নিজ কার্যালয়ে আলোকসজ্জা করেন। এ অবস্থায় উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আলোকসজ্জা করলে ইউএনও বাধা প্রদান করেন।

মংব্রাচিং মার্মা অভিযোগে আরো বলেন, ‘প্রতিকৃতিতে আলোকসজ্জার বিদ্যুতের লাইন কেন বিচ্ছন্ন করা হয়েছে তিনি ইউএনও’র কাছে জানতে চান। তখন ইউএনও বলেন, পাশ্ববর্তী উপজেলা কিংবা দেশের কোন উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আলোকসজ্জা করা হয়নি। তাই আমি বাধা দিচ্ছি।’

বুধবার রাতে মংব্রাচিং মার্মা সাংবাদিকদের কাছে বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি জাতীর পিতার প্রতি উপজেলা প্রশাসনের এ দৃষ্টতা অমর্জনীয় অপরাধ। ইউএনও’র গর্হিত আচরণের কারণে উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে প্রচণ্ড উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে এলাকায় শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা করছি।

মংব্রাচিং মার্মা বলেন, জাতীর পিতার প্রতি অবমাননাকারী ইউএনও সায়েদ ইকবালকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ উপজেলা থেকে প্রত্যাহার করা না হলে উপজেলা আওয়ামী লীগ বৃহত্তর কর্মসূচীর মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তুলবে। এতে শান্তি-শৃঙ্খলার অবনতি হলে প্রশাসনই দায়ী থাকবে।

এর আগে বুধবার দুপুরে উপজলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমন দৃষ্টতার উৎস কোথায় আমরা জানি না। তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে অন্যথায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, অতীতে এ ধরণের জনবিচ্ছিন্ন কোন ইউএনও আলীকদমে আসেনি। উপজেলার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে কারো সাথে তার সুসম্পর্ক নেই। তিনি সরকারি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে নিজের খেয়ালখুশি আচরণ করে প্রশাসন চালাচ্ছেন। তার কারণে উপজেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও ব্যহত হচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বুধবার রাত সাড়ে সাতটায় ইউএনও মো. সায়েদ ইকবাল বলেন, মুঠোফোনে আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। কাল অফিসে আসলে আমি বিস্তারিত জানাবো। তিনি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে আমার ভালো সম্পর্ক আছে। কি কারণে এসব অভিযোগ করছেন আমি জানি না।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন