parbattanews

আলীকদমে বন কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কাটা হচ্ছে মূল্যবান সেগুন গাছ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বান্দরবানের আলীকদম বন বিভাগের মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় নির্বিচারে গাছ কাটছে বনদস্যুরা। এতে করে সরকার বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে বনজ সম্পদ।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলীকদম উপজেলার মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বালু ঝিরি ও ঠান্ডা ঝিরি নামক স্থানে জনসম্মুখে কাঠ পাচাররকারীরা বড় সেগুন গাছ কেটে টুকরা টুকরা করে পাচার করার উদ্দেশ্যে স্তুপ করে রেখেছে। এসময় ওই স্থানে বন বিভাগের কোন টহল দল বা পাহাড়ায় নিয়োজিত কোন কর্মকর্তাকে চোখে পড়েনি।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে গাছ পাচারকারীরা গাছ কাটলেও বন বিভাগের কোন কর্মচারীকে টহল বা পাহারা দিতে দেখা যায়নি। ফলে কোটি টাকার গাছ কর্তন করে নিয়ে যাচ্ছে কাঠ পাচারকারীরা এবং সে গাছ স্থানীয় কাঠ ব্যাবসায়ী ও জোত মালিকদের নিকট বিক্রয় করছে।

কাগজে কলমে গাছ কাটা ও পাচার বন্ধ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে গোপনে গাছ কর্তন করে পাচার করছে প্রতিনিয়ত। মাঝে মাঝে লোক দেখানো কিছু অভিযান পরিচালনা করে কিছু কাঠ জব্দ করে হতদরিদ্র মানুষের। চুরি কিংবা গাছ কর্তনের অপরাধে গুটিকয়েক মামলা দেওয়া হলেও মূল কাঠ পাচারকারী চক্রটি থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ফলে কাঠ পাচারকারী চক্রটি আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছে।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের উপকারভোগী মোঃ আলমগীর বলেন, আমরা উপকারভোগীরা বনাঞ্চল থেকে গাছ কর্তনে বাধা দিলে, তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে মারধর করে এবং তাদের সঙ্গীয় মহিলা দিয়ে সম্মানহানি করার হুমকি দেয়। তাই সম্মান খোয়ানোর ভয়ে নীরব থাকি।

এ বিষয়ে আলীকদম মাতামুহুরী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা জমির উদ্দিন মিয়া চৌধুরী বলেন, মাঝে মাঝে কিছু লোক চুরি করে গাছ কর্তন করে নিয়ে যায়। সেটা যেমন সত্য তেমনি চুরি করা গাছ অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় সেটিও যথাযথ সত্য।

তিনি আরও বলেন মাতামুহুরী সংরক্ষিত ১২ হাজার ৮ শ’ ৫২ একর বনাঞ্চল। কিন্তু আমাদের লোকবল মাত্র ৪ জন। তবুও আমরা দিনরাত বনাঞ্চল পাহারা দিয়ে যাচ্ছি।

লামা বনবিভাগের বন কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কাঠ পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বনাঞ্চলটি দূর্গম এবং পাহাড়ী অঞ্চল হওয়ায় লোকবল স্বল্পতার কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাতামুহুরী বনাঞ্চল তদারকির জন্য আরও জনবল প্রয়োজন, উপর মহলে জনবল বাড়ানোর বিষয়টি বারংবার জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Exit mobile version