আলীকদমে মারাইংতং জাদীর পাহাড়ে ভূমি বিরোধ চলছে


বান্দরবানের আলীকদমে মারাইংতং ধম্মা জেদী বৌদ্ধ বিহারে পাশে ২ মাস আগে থেকে কটেজ নির্মাণ কে কেন্দ্র করে সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান ও বিহার পরিচালনা কমিটির সাথে বিরোধ চলছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (২১ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মারাইংতং জেদি পাহাড়ের নবনির্মিত একটি বুদ্ধ মুর্তি ভাংচুরের শিকার হয়েছে।
মারাইংতং বৌদ্ধ জাদী পরিচালনা কমিটির সভাপতি উ উইচারা মহাথেরো অভিযোগ করেছেন, লামা উপজেলার সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রোর নেতৃত্বে এই ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে, অভিযোগের বিষয়ে সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রো তাৎক্ষণিকভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি দাবি করেন, তিনি নিজে একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং কেন মূর্তি ভাঙবেন তা বোধগম্য নয়। তিনি এই ঘটনাকে একটি ষড়যন্ত্র বলেও উল্লেখ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,বেশ কিছুদিন ধরে মারাইংতং জাদীর জমি নিয়ে জাদী কর্তৃপক্ষ ও চংপাত ম্রো হেডম্যান গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল।লামা উপজেলার সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রোর নেতৃত্বেই এই ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।গতকাল বিকেলেও চংম্পাট ম্রোর সাথে প্রায় শতাধিক লোকজন সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মারাইংতং জাদীর জমি নিয়ে জাদী কর্তৃপক্ষ ও চংপাত ম্রো হেডম্যান গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই বিরোধের জের ধরেই মূর্তি ভাংচুরের ঘটনাটি ঘটেছে।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় যুব নেতা উইলিয়াম মার্মা বলেন, “বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মনে এতো বড় আঘাত দেওয়ার স্পর্ধা কার? তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। মারাইংতং পাহাড়ে নির্মাণাধীন বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুর—আমরা মর্মাহত, ব্যথিত, ক্ষুব্ধ। ধর্মীয় সহনশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী সম্প্রীতি যেন নষ্ট না হয়—এই হোক আমাদের সবার আহ্বান।”
এ ব্যাপারে ২৮৮নং আলীকদম মৌজার হেডম্যান অংহ্লাচিং মার্মা বলেন, এখন আমরা রাত ১১টা ৫৫ থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। তিনি বলেন, তারা শুনেছেন বিকেলে বৌদ্ধ মূর্তি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
আলীকদম থানার এ.এস.আই আবু সাঈদ রাত ১২টায় বলেন, তারা ঘটনাস্থলের পথে রয়েছেন। ঘটনাস্থলটি উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে পৌঁছানোর জন্য গাড়ির অপেক্ষা করছেন। গাড়ি না পেলে তারা হেঁটে ঘটনাস্থলে যাবেন বলেও জানান।
মূর্তি ভাংচুরের এই ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায় অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন।