parbattanews

আলীকদমে স্কুলছাত্রী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা : বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে

16

আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি:
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় ৫ম শ্রেণীর এক ছাত্রী প্রায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। পিতৃহীনা এ স্কুল ছাত্রী ও তার মা এ ঘটনাটি সমাজের সর্দারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজের গণ্যমান্যদের জানিয়েছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কেউ সহযোগিতার হাত বাড়াননি। শেষ মেষ গতকাল সোমবার ওই ছাত্রীর মা বান্দরবান জেলা জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির সহায়তায় আলীকদম থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ হোসাইন জানিয়েছেন তদন্ত করে তিনি মামলাটি রেকর্ডভূক্ত করবেন।

থানায় প্রদত্ত এজাহারে উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়া বশির সর্দার পাড়ার মৃত আহামদ হোসেনের স্ত্রী ছিরলোক বেগম (৪০) বলেন, স্বামীর মুত্যৃর পর তিনি মেয়েকে নিয়ে স্থানীয় মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে শামশুল আলম (৩৫) এর বাড়িতে সাত বছর ধরে আশ্রিতা ছিলেন। তার মেয়েটি নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী।

অভিযোগে বলা হয়, বাড়ির কর্তা লম্পট শামশুল আলম তের বছর বয়সী ওই ছাত্রীকে নানা প্রলোভন দিয়ে কৌশলে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের ৮ তারিখ থেকে পরপর চারবার ধর্ষণ করে। মেয়েটি বর্তমানে সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

এ ঘটনার বিষয়ে ওই ছাত্রীর মা উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, মহিলা মেম্বার, ইউপি মেম্বার ও সমাজের সর্দারসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হন। কিন্তু এ পর্যন্ত কেউই কোন সুরাহা দেননি বলে অভিযোগ করেন স্কুল ছাত্রীর মা। তিনি বলেন, বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ার পর লম্পট শামশুল আলম তাকেসহ তার মেয়েকে ঘর থেকে দুইমাস পূর্বে বের করে দিয়েছেন।

এ ঘটনাটি সমাজের সর্দারসহ গণ্যমান্যদের জানিয়েছেন মা ও মেয়ে। অভিহিত হয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে উপজেলার শীর্ষ জনপ্রতিনিধিরাও। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পিতৃহীনা এ স্কুলছাত্রী ও তার বিধবা মায়ের আর্তিতে কেউ সাড়া দেয়নি।
স্কুল ছাত্রীর মা ছিরলোক বেগম বলেন, “ইউপি চেয়ারম্যান জয়নালের কাছে আমি সহযোগিতা চাই। চেয়ারম্যান বলেন, আমার উপরে একজন আছেন। তিনি হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। তুমি তার কাছে যাও। পরে আমি উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামের অফিসে গেলে তিনি আমাকে দেখমাত্র বলেন, এখানে কেন, তোমরা চলে যাও”। তার এ বক্তব্যের বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

বান্দরবান জেলা জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির সিঃ সহ-সভাপতি কামরুল হাসান টিপু জানান, ঘটনাটি তারা জানতে পেরে স্কুল ছাত্রীটিকে আইনী সহায়তা দিতে তৎপর হয়েছেন। মানবাধিকার ইউনিটির সহযোগিতায় সোমবার ভিকটিমের মা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৈক্ষ্যং ইউপি সদস্যা ইয়াছমিন আক্তার বলেন, সপ্তাহ দুয়েক পূর্বে বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ভিকটিমের মা তার কাছে মৌখিক বললেও লিখিত অভিযোগ করেননি!

চৈক্ষ্যং ইউপি চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে আইনগত সহযোগিতা দেওয়ার জন্য ৪/৫দিন পূর্বে আমাকে ইউএনও কর্তৃক নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে ছাত্রীটি অন্তঃসত্ত্বা কিনা আমি নিশ্চিত নই। স্কুলছাত্রীর মা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ না করায় এ পর্যন্ত সহযোগিতা করতে পারিনি’।

Exit mobile version