আলীকদম ইউপি নির্বাচন নিয়ে এবার আদালতে ১২৭ জনের বিরোদ্ধে মামলা

fec-image

গতবছরের ২৮ নভেম্বর বান্দরবানের আলীকদমে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত সদর ইউপির নিবার্চনী দায়িত্বে থাকা নিবার্চন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নব-নিবার্চিত চেয়ারম্যানসহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার জিহাদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১২ মে) নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন তিনি। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাড়ে ৫ মাসের মাথায় এ ধরনের মামলাকে হঠকারিতা ও পরাজিত প্রার্থীর বালখিল্যতা দাবি করে বিজয়ী প্রার্থী ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, গণরায়কে যারা মেনে নিতে পারে না, তারা অসুস্থ মানসিকতার লোক। মামলার মাধ্যমে জনতার রায়কে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। মিথ্যাচার অচিরেই ধুলিস্মাৎ হয়ে যাবে।

এ মামলার অভিযুক্তরা হলেন, ১নং আলীকদম সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং অফিসার আতিকুল ইসলাম চৌধুরী, ৭নং ওয়ার্ডের প্রিজাইডিং অফিসার মো. জসীম উদ্দীন, ৭নং ওয়ার্ডের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ওবাইদুল হাকিম, ৭নং ওয়ার্ডের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আশিকুল ইসলাম, ৭নং ওয়ার্ডের পোলিং অফিসার হুমাইরা জান্নাত লিমা, ৭নং ওয়ার্ডের পোলিং অফিসার সামহ্রী মারমা, ৭নং ওয়ার্ডের পোলিং অফিসার মো. আবু জাফর, ৮নং ওয়ার্ডের প্রিজাইডিং অফিসার হুমায়ুন কবির, ৮নং ওয়ার্ডের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আক্তার উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ডের প্রিজাইডিং অফিসার রামেল পাল, ৯নং ওয়ার্ডের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ হোছেনগীর, ৫নং ওয়ার্ডের প্রিজাইডিং অফিসার গিয়াস উদ্দীন, ৫নং ওয়ার্ডের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার চানু মারমাসহ আলীকদমের ১নং সদর ইউনিয়নে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনের সময় দায়িত্বরত ১২৭ জন প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার।

মামলার বাদী আনোয়ার জিহাদ চৌধুরী দাবি করেন, নিবার্চনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা প্রতিপক্ষের যোগসাজেশে নিবার্চনে কারচুপি করেছেন। ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। রেজাল্টশিটে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া হয়। ৮নং ওয়ার্ডে ৮৯.৮৮% এবং ৯নং ওয়ার্ডে ৯৯.১৯% ভোট গ্রহণ দেখানো হয়।

মামলার বিবাদী উপজেলা নিবার্চন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আতিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নিবার্চনে কারচুপির অভিযোগটি আঞ্চলিক নিবার্চন কর্মকর্তা তদন্তক করেছেন। তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এরপর চলতি বছরের ১২ এপ্রিল গেজেট প্রকাশিত হয়। তিনি আরো বলেন, আদালতে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি অফিসিয়ালী কিছু জানেন না। তবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছেন।

উল্লেখ্য, গতবছরের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১নং সদর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ নাছির উদ্দীনকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে নির্বাচন কমিশনসহ নানান দপ্তরে অভিযোগ আনেন পরাজিত এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনোয়ার জিহাদ চৌধুরী। যা তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশন ১২ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। গত ২৫ এপ্রিল বান্দরবান জেলা প্রশাসক কর্তৃক বিজয়ী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে এবং একইদিন আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহরুবা ইসলাম উপজেলা পরিষদ হলরূমে নির্বাচিত সদস্যা-সদস্যাদের শপথবাক্য পাঠ করান।

বান্দরবান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, নির্বাচনের জয় বা পরাজয় নিয়ে পরাজিত প্রার্থী গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন