রাঙামাটি প্রতিনিধি:
আশ্রয় কেন্দ্রের আশ্রিতরা ভালো আছে। খাদ্য এবং ঔষধপত্রের কোন অভাব নেই। আশ্রয় কেন্দ্রের আশ্রিতরা সরকারি-বেসরকারি, নিরাপত্তা বাহিনী ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো থেকে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।
সোমবার সকালে শহরের সরকারি কলেজ, ভেদভেদীস্থ বিএডিসি, সড়ক বিভাগ, যুবউন্নয়ন, টিভি কেন্দ্র, বেতার কেন্দ্র, উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, আব্দুল আলী একাডেমী, শিশু একাডেমী, সরকারি গভ. স্কুল, আমানতবাগ স্কুল আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে আশ্রিতরা জানান, সকাল-বিকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার পাচ্ছি। কোন সমস্যা হচ্ছে না।
সরকারি কলেজ আশ্রয় কেন্দ্রের মেডিকেল টিম এর ডাক্তার আব্দুর রহমান জানান, এ কেন্দ্রের ২১৮ জনই সুস্থ আছে। তবে আজকে দূর্গত এলাকার আরো লোকজন আসতে পারে বলেও জানান তিনি। এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আশ্রিতদের মধ্যে দুপুরের খাবারও বিতরণ করে।
বিএডিসি’র নুরুল ইসলাম, আহমদ মিয়া, বেতার কেন্দ্রের মিনারা বেগম, টিভি কেন্দ্রের কুলসুম বেগম, যুব উন্নয়ন কেন্দ্রের জ্যোতিষ সেন ও দর্পণ চাকমা জানান এখানে খাদ্যের কোন অভাব হচ্ছেনা। ঔষধপত্রও নিয়মিত পাচ্ছি। এখনো পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। তবে সরকারি সুযোগ কম হলেও নিরাপত্তা বাহিনী এবং সেচ্ছসেবী সংগঠনগুলো নিয়মিত সেবা দান করে যাচ্ছে। রবিবার সেনা সুত্রগুলো জানায়, একই সময়ে সকল আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিতদের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
এদিকে ভেদভেদীস্থ শ্রী শ্রী লোকনাথ আশ্রমের পক্ষ থেকে সেখানের প্রায় ৫০০ আশ্রিতদের নিজ উদ্যোগে সকাল -বিকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবারসহ ওরস্যালাইন এবং শুকনো খাবার, মোমবাতি ও পানি বিতরণ করছে। আশ্রম কমিটির কুশল চৌধুরী, মিলন কান্তি চৌধুরী ও আনন্দ ধর জানান, এটি নিজ উদ্যেগেই করা হচ্ছে। তবে কেউ দান করতে চাইলে আশ্রিতদের জন্য নেওয়া হবে।
এদিকে কাপ্তাই লেকের ফারুয়া-কাপ্তাই রুট বিপুল পরিমাণ কুচুরিপানায় ঢেকে যাওয়ায় সেনাবাহিনীর বিলাইছড়ি জোন ভিডিপির সহায়তায় কুচুরিপানা অপসারণ করে নৌ চলাচল উপযোগী করেছে। একইসাথে এই রুটটি যাতে পুণরায় নৌ চলাচলের অনুপোযোগী না হয়ে পড়ে সেকারণে ভিডিপির টিম দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
এদিকে বড়ইছড়ি-ওয়াগ্গাছড়া-রাঙামাটি রাস্তায় নতুন করে পাহাড় ধসের কারণে মাটি অপসারণ কাজে ওয়াগ্গাছড়া বিজিবি কাপ্তাই কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে দুইটি ড্রোজার সংগ্রহ করে এক প্লাটুন জনবল নিয়ে মাটি অপসারণ করে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিলাইছড়ি জোনের আওতায় দূর্গতদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে রবিবার থেকে আবারো দফায় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সোমবার ভোর সকালে টানা বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারনে পাহাড়ী ও ঘটনাস্থলের অনেকেই এখন আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাচ্ছে। ফলে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় আশ্রিতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসন দূর্যোগ মোকাবিলা ও জনস্বার্থে সরকারি সর্তকমূলক বার্তা প্রচার অব্যাহত রেখেছে। গতকাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিতের সংখ্যা প্রায় ২৬ শত তবে নতুন করে এর সংখ্যা বাড়ছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা প্রয়োজনে বাড়ানো হবে এবং আশ্রিতদের জন্য সরকারি সহযোগীতা অব্যহত থাকবে।