আড়াই বছরেও নির্মিত হয়নি করিমদাদ মিয়া জেটিঘাট, জনদুর্ভোগ

fec-image

আড়াই বছরেও নির্মিত হয়নি কক্সবাজারের পেকুয়ার উজানটিয়া করিমদাদ মিয়া জেটি। ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে।

তথ্যসূত্রে জানা যায়, এই জেটি দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে যায়। তারপরও কোনভাবে মালামাল পরিবহন করলোও কাল হয়ে দাঁড়ায় ২০১৮ সালের নভেম্বরে বালুবাহী একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে এই জেটিঘাট। গত আড়াই বছরেও অন্য আরেকটি ঘাট নির্মাণ না হওয়ায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উজানটিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদ্বিয়া ও মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী দ্বীপের অন্তত ২০ হাজার মানুষ। তাছাড়াও নিত্য প্রয়োজনীয় ও উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

সরেজমিন দেখা যায়, করিমদাদ মিয়ার ঘাট স্টেশন এলাকায় পাকা জেটিঘাটটির মূল অবকাঠামোর একাংশ নদীতে আর বাকি অংশ নদীর চরে পড়ে রয়েছে। পাকা জেটিঘাটের বিকল্প হিসেবে এর পাশে কাঠের অস্থায়ী একটি ঘাট তৈরি করা হয়েছে। এই কাঠের জেটিতে নৌকা বা ট্রলার ভেড়ানোর সুযোগ নেই। ২০ থেকে ৩০ ফুট দূরে নোঙর ফেলতে হয়। মানুষ হাঁটু কাদায় নেমে কাঠের জেটিতে উঠছে। এ জেটি দিয়ে ভারী কোনো মালামাল পরিবহন সম্ভব নয়। এতে উৎপাদিত চিংড়ি ও লবণ স্থলপথে পরিবহন বন্ধ হয়ে পড়েছে।

উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও উজানটিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা জালালউদ্দিন বলেন, করিমদাদ মিয়ার ঘাটটি উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ঘাটে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামগামী লঞ্চ নিয়মিত ভেড়ে। মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামালও উঠানামা করে। এ ছাড়া উৎপাদিত লবণ, চিংড়ি ও কাঁকড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ঘাট দিয়ে নেওয়া হয়। পাকা জেটিঘাটটি ভেঙে পড়ায় স্থানীয় মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিকল্প উপায়ে পণ্য পরিবহন সচল রাখতে অতিরিক্ত টাকা ও জনবল ব্যয় হচ্ছে।

উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত বাল্কহেডটির মালিকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত জেটিঘাটের পূর্বপাশে কাঠের একটি জেটি নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু কাঠের ঘাটটি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট ও অপ্রশস্ত।

এ বিষয়ে উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম বলেন, ২০০৪ সালে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর পাকা জেটিঘাটটি নির্মাণ করেছিল। ঘাটটি ভেঙে পড়ার ফলে উজানটিয়ার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদ্বিয়ার বাসিন্দারা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ ছাড়া মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও কুতুবদিয়ায় যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। জনসাধারণের দুর্দশা লাঘবে জেটিঘাটটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী লুৎফুর রহমান বলেন, উজানটিয়ার করিমদাদ মিয়ার জেটিঘাট ভেঙে পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতে ১০০ মিটারের একটি নতুন জেটি নির্মাণের প্রস্তাব জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাঠের জেটিঘাটটি বিকল্প হিসেবে আপাতত ব্যবহার করা হচ্ছে। একই স্থানে একটি পাকা ঘাট নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব পাস হলে দ্রুত নতুন জেটিঘাট নির্মাণ শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন