ইঁদুরের আক্রমণে বান্দরবানের জুম চাষিরা দিশেহারা

fec-image

বান্দরবনের জুম চাষিরা ইঁদুরের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কারণ তাদের জুম চাষের ফসল নষ্ট করছে কোটি কোটি ইঁদুর। কীভাবে ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে তা বুঝতে পারছেন না কৃষকরা।

আবার এবার আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি। তার ওপরে ইঁদুরের আক্রমণ। এই দুইয়ের মধ্যে পড়ে এখন কার্যত দিশাহারা ওই এলাকার চাষিরা। কী করে তাদের সারাবছরের খাবার জোগাড় করা যাবে তা নিয়েই এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে জুম চাষিদের।

মূলত জুম পদ্ধতিতে এই এলাকায় চাষাবাদ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বান্দরবানের রুমা, লামা, থানচিসহ বিভিন্ন উপজেলায় জুম চাষ ভালো হয়নি। আরেকদিকে রুমা উপজেলার পাইন্দু ও সদর ইউনিয়নের জুম ক্ষেতে ধানের শীষ খেয়ে সাবাড় করে দিয়ে ইঁদুরের দল।

চাষিরা জানান, চলতি বছর বাঁশঝাড়ে ফুল ও ফল আসার কারণে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়েছে। বড় আকারের ইঁদুর ঘুরে বেড়াচ্ছে তাঁদের চাষের জমিতে। ইঁদুর ধান, যব ধান, ভুট্টা, তিলসহ অন্যান্য ফসল খেয়ে ফেলায় খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রুমার পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার অংসা প্রু মারমা বলেন, “ এবার এই অঞ্চলে বৃষ্টি হয়নি। তার ওপরে ইঁদুরের উপদ্রব। ইঁদুর সব ফসল খেয়ে নিচ্ছে, নষ্ট করছে। এই এলাকায় এবার খাদ্যের হাহাকার দেখা দেবে। পাহাড়ের জমিতে ধান, তিল, ভুট্টা, লঙ্কা, শাক-সবজি, বিভিন্ন ধরনের ফল, কুমড়ো ইত্যাদির চাষ হয়। পাহাড়ি এলাকার মানুষ জুম চাষের মাধ্যমে সারা বছরের ধান সংগ্রহ করে রাখেন। কোনও কারণে ভালো ফলন না হলে, ইঁদুরের আক্রমণ বা বন্যা দেখা দিলে বছরের খাদ্য মজুত করা সম্ভব হয় না।

এই এলাকার প্রায় ৯৫% মানুষ জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল। ধানের ফসল ভালো না হলে সমস্যায় পড়বেন ৭০ থেকে ৮০% পরিবার। তারা জানান, ২০১২ এবং ২০১৬ সালেও বান্দরবানের থানচি, রুমা, রাঙামাটির সাজেক, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল।

রুমা উপজেলার মুয়ালপি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি আধিকারিক শাওন চৌধুরী জানান, রুমার সানাপ্রু পাড়া, ক্যাতুই পাড়া, বাচরাং পাড়া, হ্যাপিহিল পাড়া, আর্তা পাড়া, প্রাংসাপাড়া ও মুনন্নম পাড়ার ১৮০টি পরিবার ইঁদুরের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানের ৭০ হেক্টর জুম চাষের জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ হয়েছে।

আধিকারীকরা জানান, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। কিন্তু ইঁদুরের আক্রমণ থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে তার কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন