ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হচ্ছে রোহিঙ্গারা

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে প্রায় ৪ বছর ধরে বসবাস করছে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী। এসব রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে দেশি-বিদেশি দুই শতাধিক এনজিও সংস্থা। মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর পাশাপাশি তাদের বাহ্যিক কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আনতে প্রতিনিয়তই চেষ্টা চালাচ্ছেন এনজিওরা।

রোহিঙ্গাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজিতে দক্ষ করে তুলতে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বেশকিছু এনজিও সংস্থা। সরেজমিনে দেখা গেছে, রোহিঙ্গা শিশু-কিশোররা ইংরেজি ভাষায় পটু হচ্ছে। নানা প্রতিকূল অবস্থাতেও তারা ইংরেজি ভাষা শিখছে আনন্দের সাথে। ইংরেজি শিখতে তাদের আগ্রহেরও কমতি নেই।

সচেতন রোহিঙ্গারা জানান, তাদের নানা বঞ্চনার কথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানাতেই মূলত ইংরেজি ভাষার চর্চা করছেন।

দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের শিক্ষিত করতে ক্যাম্পের স্কুলগুলোতে শুধু ইংরেজিই নয়, পড়ানো হয় তাদের মিয়ানমারের ভাষার নানান বইও।

উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোডেক, ড্যাম, মুক্তি কক্সবাজার, ব্র্যাক, ইপসা সহ আরও অনেক এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গাদের পড়াশোনা নিয়ে কাজ করছেন।

মুক্তি কক্সবাজার সংস্থার এক রোহিঙ্গা শিক্ষক জানান, গত দু’বছর ধরে রোহিঙ্গা শিশু-কিশোরদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। বেশ কয়েকটি সংস্থা রোহিঙ্গাদের শিক্ষিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এতে রোহিঙ্গাদের কোনো ফি বা খরচ দিতে হয় না। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিশু-কিশোররা অন্যান্য পড়াশোনার পাশাপাশি ইংরেজি শেখায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী কেফায়েতুল্লাহ্ জানান, আমি ইংরেজি শিখছি কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষা। এই ভাষার মাধ্যমে আমরা বহির্বিশ্বকে জানতে পারি। এই ভাষা শিখলে আমরা উপলব্ধি করতে পারবো যে, কোনটি ভুল আর কোনটি সঠিক।

একই সুরে আরেক রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী জানান, ইংরেজি একটি আন্তর্জাতিক ভাষা। এটি আমাদের শেখা উচিত। আমি বর্তমানে ইংরেজি পড়ার চেষ্টা করছি এবং দারুণ উপভোগ করছি।

বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানান, বাংলাদেশে এসে আমাদের সন্তানদের পড়ালেখা করাতে পেরে বেশ আনন্দিত। ওদেশে (মিয়ানমার) থাকতে পারিনি। আমাদের ছেলেমেয়েরা ফরেনারদের সাথে ইংরেজি ভাষায় কথা বলছে দেখে ভালো লাগছে।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের ইংরেজি শেখা বা শিক্ষিত হওয়ার বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখছেন স্থানীয় জনগোষ্ঠী। তারা মনে করেন, রোহিঙ্গারা শিক্ষিত হলে বাংলাদেশের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে অদূর ভবিষ্যতে। বর্তমানেও অনেক শিক্ষিত রোহিঙ্গারা তাদের শিক্ষা-দীক্ষার বলে বিভিন্ন এনজিও-আইএনজিওতে চাকরি করছেন। এতে স্থানীয় শিক্ষিত যুবক-যুবতী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাকরির ক্ষেত্রে।

স্থানীয়রা জানান, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। প্রত্যেকদিন কোনো না কোনো অপরাধ করছে। ইয়াবা পাচার থেকে শুরু করে, ছিনতাই, চুরি, খুন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এসব দিক বিবেচনা করে স্থানীয়রা মনে করছেন, রোহিঙ্গারা শিক্ষিত হলে আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন