ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল তেল আবিব


ইরানের শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে বলেছে, নতুন করেও ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে। সেসব প্রতিহত এবং হতাহতদের উদ্ধারে তারা কাজ করছেন।
শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইরান ইসরায়েলের দিকে বেশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যারেজ নিক্ষেপ করে। যার ফলে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ আশ্রয়ের জন্য ছোটাছুটি করতে বাধ্য হয়। আকাশে আগত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বাধার কারণে আলোর রেখা এবং আগুনের গোলার দৃশ্যে পুরো শহর আলোকিত হয়ে উঠে।
এই হামলায় তিন জন নিহত এবং ৬০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের তথ্য মতে, আরেকজন ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত এবং বেশ কয়েকজন মাঝারি মাত্রায় আহত হয়েছেন। বাকিরা হালকাভাবে আহত এবং তীব্র উদ্বেগে ভুগছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তারা হামলার সময় আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন না।
ইরানি মিডিয়া দাবি করেছে, ইসরায়েলের দিকে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। যদিও ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) অনুমান করছে যে প্রকৃত সংখ্যা ১০০-র কম।
কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র মধ্য ইসরায়েলে আঘাত হানে। তেল আবিব এলাকায় বড় বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বেশ কয়েকটি আঘাতের এলাকা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
আইডিএফ জানিয়েছে, হোম ফ্রন্ট কমান্ডের সৈন্যরা তেল আবিব এলাকার একটি ভবন থেকে একজন বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করেছে। ভবনটিতে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। অন্যান্য শহরে উদ্ধার অভিযান চলছে।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের হামলার জবাব দেওয়া শুরু করেছে। ইসরাইলকে লক্ষ্য করে তারা কয়েকশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) বলেছে, সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির নির্দেশে তারা ইসরাইলের মিলিটারি ও আকাশ প্রতিরক্ষা ক্যাম্পগুলোকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোররাতে অপারেশন রাইজিং লায়ন নামে ইরানে আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। ইরানে এখন পর্যন্ত এটিকে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় আক্রমণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়েই ইসরাইলের প্রায় ২০০ যুদ্ধবিমান অভিযানে যোগ দেয় এবং ইরানের ১০০টিরও বেশি স্থানে হামলা চালায়। এদের মধ্যে ছিল পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক মিসাইল স্থাপনাগুলো, সামরিক ঘাঁটি ও আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম। পরবর্তীতে শুক্রবার বিভিন্ন সময় নতুন করে আরও বেশ কিছু হামলা চালায় ইসরাইল।
এসব হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান, রেভ্যলুশনারি গার্ডের প্রধানসহ অন্তত ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। এছাড়া অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসা কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরই ইরান এই হামলার সমুচিত জবাব দেওয়ার কথা জানায়।