ইসরায়েল ইরানকে নিয়ে ‘ভুল গণনা’ করেছে, আমরা ‘ঠিক’ করে দেব : খামেনি

fec-image

ইরানের প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলা নিয়ে প্রথমবারের মতো কথা বলেছেন। তিনি হুমকির সুরে বলেছেন, ইরানকে নিয়ে ইসরায়েল ভুল গণনা করেছে। যা তারা ঠিক করে দেবেন। এরমাধ্যমে মূলত ইসরায়েলের ওপর পাল্টা হামলার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত রাজধানী তেহরানসহ ইরানের তিনটি জায়গায় বিমান ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের একাধিক সামরিক ও মিসাইল ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিল তারা।

খামেনি বলেছেন ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘হালকাভাবে’ নেওয়া উচিত হবে না, আবার ‘অতিরঞ্জিতও’ করা যাবে না।

ইসরায়েলকে হুমকি দিয়ে ইরানের প্রধান ধর্মীয় নেতা বলেন, “দুইদিন আগে ইহুদিবাদী সরকারের (ইসরায়েল) করা অপরাধকে হালকা ভাবে নেওয়া যাবে না। আবার অতিরঞ্জিতও করা যাবে না। তারা ইরানকে চেনে না এবং তারা এখনো সঠিকভাবে ইরানের সক্ষমতা, ইচ্ছাশক্তিকে বুঝতে পারেনি। তাদের আমাদের তা বোঝাতে হবে।”

ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন ইসরায়েলের হামলায় তাদের খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যদিও ইসরায়েলি হামলায় তাদের চার সেনা নিহত হয়েছেন। এছাড়া মিসাইল কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।

দখলদার ইসরায়েল বলেছে, ইরানে তাদের বিমানবাহিনী ‘নির্ভূল এবং সীমিত’ হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন ইরানে হামলা চালিয়ে তারা তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছেন।

এদিকে এই হামলার জবাবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালাবে বলে জানিয়েছে তেহরান। দেশটির আধা সরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছে সরকারি একটি সূত্র। পাল্টা হামলা চালানোর জন্য ইরান প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূত্রটি বলেছে, “কোনো সন্দেহ নেই ইরানের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের জবাব ইসরায়েল পাবে।”

শনিবার সূর্যের আলো ফোটার আগে রাজধানী তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান সেখানকার বাসিন্দারা। বিশেষ করে রাজধানীর পশ্চিমদিকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর হামলা প্রতিরোধে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের শব্দ এগুলো।

গত ১ অক্টোবর দখলদার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ১৮১টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ে ইরান। সাবেক হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ এবং চৌকস বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার আব্বাস নিলফোরোসানকে হত্যার জবাব দিতে এসব মিসাইল ছোড়ে তেহরান। এতে লক্ষ্য করা হয় দখলদার ইসরায়েলের বিমান ঘাঁটি। ইসরায়েলকে দেশ হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় ওই ভূখণ্ডকে অধিকৃত ফিলিস্তিনের অংশ হিসেবে অভিহিত করে থাকে ইরান।

তেহরানের পক্ষ থেকে ওই সময় জানানো হয় ইসরায়েল যদি ইরানে কোনো ধরনের হামলা চালায় তাহলে সেটির উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

ইসরায়েল হামলা চালানোয় ইরান এখন কী ব্যবস্থা নেবে সেটির দিকে নজর রাখছে বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমাদেশগুলো ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হামলা পাল্টা-হামলার সাইকেল যেন এখনই শেষ করা হয়।

সূত্র: বিবিসি

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন