ঈদগাঁওতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ও আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি
কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে কোটি টাকার অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে অবশেষে দুর্নীতির অভিযোগ উঠা প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জন্নাতকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে বাধ্য হয়েছেন ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জারি করা পত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) ছিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পূর্ব নির্ধারিত আন্দোলন কর্মসূচি। যা এলাকা জুড়ে মাইক ও লিফলেটযোগে ব্যাপক প্রচার করা হয়।
অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় আগের দিন রাতে দুই দিনের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওইদিন এবং রাতে স্থানীয় বিভিন্ন মহল নানাভাবে পরিস্থিতি সামলাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অভিযোগ উঠা প্রধান শিক্ষকের সাথে দফায় দফায় যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। পরদিন রবিবার সকাল থেকে পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহল ঈদগাঁও বাজার ও প্রতিষ্ঠান এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার সংবাদ শুনে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা মহাসড়কে অবস্থান নেয় এবং প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এভাবে হাজারো শিক্ষার্থী সড়কে অবস্থান অব্যাহত রাখলে ঈদগাঁও বাসস্টেশনস্থ মহাসড়কের উভয় পাশে শতশত গাড়ি আটকা পড়ে। দুপুরের দিকে নির্দিষ্ট কিছু শর্তজুড়ে দিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে অব্যাহত দেয়া হয়েছে মর্মে উপজেলা কার্যালয় থেকে পত্র জারি হলে দুপুর ১টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে যানজট নিরসনে ট্রাফিকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, উক্ত খুরশিদুল জন্নাত ঈদগাহ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নীতিমালার অপব্যবহার করে বহিরাগত কিছু লোক, পতিত সরকারের কতিপয় নেতা ও ক্ষমতাশীন দলের প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা চলতে থাকে বছরের পর বছর। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ হলেও ক্ষমতাশীন দলের প্রভাবে কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে বারবার এসব ধামাচাপা দেয়। এভাবেই চলতে থাকে কোটি টাকার দুর্নীতি। এসব ধামাচাপায় গড়ে তুলে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী। যাদের দিয়ে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদী শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রদের উপর হামলা, হুমকি,নাজেহাল ও হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতল হলে পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং এ দুর্নীর্ণীতিবাজ এ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠে। যা চরম আকার ধারণ করে।