ঈদগাঁওয়ের দুই শহীদ পরিবারের যেমন কেটেছে ঈদ


ফ্যাসিবাদ বিরোধী জুলাই বিপ্লবে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার দুই শহীদ নুরুল আমিন ও নুরুল মোস্তফার পরিবারের প্রথম ঈদুল আয্হা কেমন কাটছে এ তথ্য নিতে গিয়ে জানা যায় কোনো দল বা সরকারি সংস্থা তেমন উল্লেখযোগ্য সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।
তারপরেও আশার আলো হচ্ছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী জুলাই বিপ্লবে ঈদগাঁও উপজেলার দুই শহীদ পরিবারের খোঁজখবর রেখেছেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী বড়-ছোট কয়েকটি দল ও সংগঠন।
জুলাই বিপ্লবের ঈদগাঁও উপজেলার প্রথম শহীদ নুরুল আমিনের পরিবারের প্রথম কোরবানির ঈদ কেমন কাটছে শহীদের একমাত্র ভাই মোসলেম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, একমাত্র ভাই শহীদ নুরুল আমিনকে ছাড়া তার নব্বই বয়সোর্ধ্ব পিতা এবং এক ভাই ছয় বোনের দরিদ্র জর্জরিত সংসারের ঘানি তাকেই টেনে নিতে হচ্ছে, অপরের জমিতে ক্ষেতখামারে দিনমজুরের কাজ করে।
তিনি আরো জানান, জুলাই ফাউন্ডেশনের কিছু উপহার নিয়ে কোরবানি ঈদের আগের দিন দুপুরে তাদের ঘরে আসেন ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা। ঈদের দিন রাতে কিছু মাংস উপহার দেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিনিধিরা।
সর্বশেষ ঈদের পরের দিন বিকালে জুলাই প্লাটফর্মের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি প্রতিনিধিরাও পরিবারের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেন এবং শহীদ নুরুল আমিনের কবর জেয়ারত করেন।
এদিকে ঈদগাঁও উপজেলার দ্বিতীয় শহীদ নুরুল মোস্তফার গর্বিত পিতা শফি উল্লাহর সাথে কথা হলে হতাশাযুক্ত কন্ঠে বলেন, কোরবানির মাসের নতুন চাঁদ উদয়ের দিন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ঈদগাঁও উপজেলা তার পরিবারকে নগদ টাকা সহায়তা দেন। কোরবানির দিন রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কিছু মাংস উপহার দেন এবং ঈদের পরদিন জুলাই ফ্লাট ফর্মের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি কিছু ঈদ উপহার দেন এবং শহীদ নুরুল মোস্তফার কবর জিয়ারত করেন।
তিনি হাহুতাশ করে বলেন, তার শিশু ছেলে দেশের জন্য জীবন দেয়ার পরও এ পর্যন্ত তার ছেলে শহীদের তালিকায় গেজেটভুক্ত না হওয়ায় তার পরিবার কোনো রকম সরকারি সাহায্য পাননি বলে আক্ষেপ করেন।
তিনি আরো বলেন, অপরের বাড়িতে দিন মজুরের কাজ করে তাকে ছয় সদস্যের পরিবারের সংসার টানতে হচ্ছে। তাকে সাহায্য করার মত পরিবারে আর কেউ নেই।
উল্লেখ্য, জুলাই বিপ্লবে ঈদগাঁও উপজেলার দুই শহীদের মধ্যে প্রথম শহীদ নুরুল আমিন সরকারি গেজেটভুক্ত হয়ে তার পরিবার সরকার প্রদত্ত সরকারি ও বেসরকারি নানা সুবিধা পেয়ে আসছেন।
তবে অপর দ্বিতীয় শহীদ নুরুল মোস্তফার হতভাগা পরিবার রোহিঙ্গা বংশোদ্ভুত অজুহাতে বিপ্লব পরবর্তী বিগত দশ মাসেও সরকার তাকে শহীদ হিসেবে গেজেটভুক্ত করেনি। যে কারণে জীবন দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করলেও শহীদ নুরুল মোস্তফার পরিবার বিগত নয় মাসে সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাননি।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর এক লাখ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত ৫০ হাজার টাকা নগদ সাহায্য ছাড়া আর বড় কোন অংকের বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠন থেকে সাহায্য পাননি।