কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁহতে গ্যাস সিলিন্ডার ক্রসফিলিংয়ের অবৈধ গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কর্মরত দুই শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে (দগ্ধ শ্রমিকদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত)।
এদিকে ঘটনার পরপরই এ অবৈধ গুদাম পক্ষ স্থানীয় একটি চক্রের মাধ্যমে প্রশাসনিক ধরা থেকে রক্ষা পেতে মোটা অংকের মিশনে নেমেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ ।
৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ঈদগাঁহ কলেজ গেইটস্থ সংলগ্ন এ অবৈধ গুদামে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে জানা যায়, সকালে হঠাৎ বিকট শব্দের বিস্ফোরণে আশপাশ এলাকা কেঁপে উঠে এবং লোকজন আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটাছুটি শুরু করে। একের পর এক গ্যাস সিলিণ্ডার বিষ্ফোরণের বিকট শব্দ আর আগুনে লেলিহান শিখায় মুহুর্তেঔ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
প্রায় আধা ঘণ্টা পর রামু ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তাদের চেষ্টায় আগুন কোনরকম নিয়ন্ত্রণে আসে ঘন্টা খানেক পর। ততক্ষণে ওই গুদামের ৮০ ভাগ অংশ ভস্মিভুত হয়ে যায়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবু ছৈয়দ নামের এক লোকের গ্যাস সিলিন্ডারের অবৈধ গুদম থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলেও সিলিন্ডারের ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনের কারণে কাছে যাওয়া অসম্ভব ছিল। দীর্ঘক্ষণ মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহন আটকা পড়ে। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছেন ঈদগাঁহ চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম, তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) আবদুল হালিম।
প্রশাসনের নাকের ডগায় দেশের প্রচলিত আইন, পরিবেশ ও জন নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিষ্ফোরক লাইসেন্স, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ছাড়াই দিনের পর দিন প্রতারণা করে এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসার মাধ্যমে জনগণের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি মানুষের জীবনকে ঝুঁকি মধ্যে ফেলেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাশার জানান, রাত গভীর হলেই এ গ্যাসের গোদামে ট্রাকে করে বড় গ্যাসের সিলিন্ডার আসে এবং গভীর রাত অবধি সে গুলো ছোট সিলিন্ডারে ওজনে কম পরিমাণে ভর্তি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছে মাসের পর মাস।
ঈদগাঁহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম জানান, এমন ব্যবসার জন্য ঈদগাহ ইউপি থেকে কোন ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়নি।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, এদের কোন বিষ্ফোরক নদ ও পরিবেশ ছাড়পত্র কোনটাই দেয়া হয়নি। দুর্ঘটনাস্থলে পাওয়া যাইনি কোন ফায়ার এক্সটনিজার।
স্থানীয় সচেতন মহল জনগণের জীবন ও মাল নিয়ে ছিনিমিনিতে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে মালিকপক্ষ এটিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলে দাবি করছে।