ঈদের ছুটিতে খাগড়াছড়িতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম
ঈদ-উল আযহার টানা ছুটিতে খাগড়াছড়িতে এবারও বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসছেন। প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্য ও ঝর্ণার শীতলতায় গা ভাসাতে পাহাড়ি কন্যা খাগড়াছড়িতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসবেন সৌন্দর্য্য পিপাসু পর্যটকরা। টানা এক সপ্তাহের জন্য হোটেল-মোটেল বুকিং হয়ে গেছে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে নয়নাভিরাম নানান দৃশ্য। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনধারা, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতি তৈরীর নজরকাড়া হাজারো চিত্র। চার পাশে বিছিয়ে রাখা শুভ্র মেঘের চাদরের নীচে রয়েছে সবুজ বনারাজিতে ঘেরা ঢেউ খেলানো অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়। তার মাঝ দিয়ে চলে গেছে আঁকা-বাঁকা সড়ক।
আলুটিলা রিছাং ঝর্ণা, তৈদুছড়া ঝরণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্কের জুলন্ত সেতু, মায়াবিনী লেক, দেবতা পুকুর, হাতিমাথা সিড়ি, জেলার সীমান্ত শহর রামগড়ে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস অথাৎ বিডিআরের বর্তমানে বিজিবি’র ‘ জম্ম স্থান’, কৃত্রিম লেক ও রামগড় জুলন্ত সেতুসহ নয়নাভিরাম দৃশ্য।
আলুটিলা খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক সৃষ্ট রহস্যময় আলুটিলা গুহা। রোমাঞ্চকর এ গুহার একপ্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের হওয়া যায়। এ পাহাড় চূড়া থেকে পুরো জেলা শহরকে দেখা যায়। রিছাং ঝর্ণা এ জেলার আরেকটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রায় ১০০ ফুট উপর থেকে অবিরাম আছড়ে পড়ে স্বচ্ছ শুভ্র জলরাশি। এখানে পিচ্ছিল পাথরে ওয়াটার স্লাইডিং করা যায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার রয়েছে বহু হোটেল- রেষ্টুরেন্ট। পর্যটকদের সেবা দিকে হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষও প্রস্তুত।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ম্যানেজার এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, ১০ আগষ্ট থেকে ১৬ আগষ্ট পর্যন্ত মোটেলের সবগুলো রুম বুকিং হয়ে গেছে। খাগড়াছড়ি হোটেল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া জানান, এবার খাগড়াছড়িতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম হবে। হোটেলের প্রায় রুম বুকিং হয়ে গেছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান জানান, খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পর্যটন স্পর্টে নিয়োগ করা হয়েছে পোষাকের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
ঢাকা হতে খাগড়াছড়ির দূরত্ব ৩১৬ কি.মি. ও চট্টগ্রাম হতে ১০৯ কি.মি.। রাজধানী শহর ঢাকার কমলাপুর, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, কলাবাগান থেকে সরাসরি নানা বিলাস বহুল পরিবহনের বাসযোগে খাগড়াছড়ি আসতে পারেন আপনি। তবে আসার আগে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আসতে হবে। অন্যথায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে। খাগড়াছড়ির প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্য ও ঝর্ণার শীতল পানি আপনাকেও হাত ছানি দিয়ে ডাকছে।