ঈদের পর খুলছে কক্সবাজারের হোটেল বিনোদন কেন্দ্র: সৈকতে ব্যাপক ভাঙন


করোনা ভাইরাসে সাড়ে তিন মাসের লকডাউনের পর দেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারের হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র গুলো খুলছে। এ দীর্ঘ সময়ে সৈকত অন্য রূপ ধারণ করেছে।
এসময় লাল কাকড়া, সাগর লতা আর প্রাকৃতিক পশু-পাখির বিচরণ বেড়েছে সৈকতে। এখন বর্ষায় সাগরে পানি বেড়েছে। সাগরের রুক্ষ ঢেউগুলো আচঁড়ে পড়ছে জনমানবশূন্য সৈকতে। এতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
করোনাকালীন দীর্ঘ লকডাউনের কক্সবাজারের হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র গুলো ঈদুল আজহার পর খুলছে। তবে দীর্ঘ লকডাউনের পর পর্যটকরা কক্সবাজার সৈকতে দেখবে নতুন রূপ।
আজ (৩১ জুলাই) শুক্রবার সরেজমিনে সৈকতে গিয়ে দেখাগেছে, সৈকতের নাজিরারটেক থেকে কলাতলীর ডলফিন মোড় সোজা সৈকত এলাকায় আঁচড়ে পড়ছে সাগরের বড় বড় ঢেউ। এতে ভাঙন দেখা দিয়েছে সৈকতের বিভিন্ন স্থানে। এই ভাঙনের ক্ষতবিক্ষত হয়ে সৌন্দর্য হারাতে বসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত।
এই ভাঙনে একদিকে সাগরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে সৃজিত বিস্তীর্ণ ঝাউবাগানের হাজার হাজার ঝাউগাছ। পাশাপাশি সাগরে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সৈকতে নির্মিত বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে জেলা প্রশাসন নির্মিত উন্মুক্ত মঞ্চ পর্যন্ত সাগরের ঢেউ এ ভেঙে গেছে।
সৈকতের এই এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে রয়েছে, টুরিস্ট পুলিশের বহুতল নিজস্ব ভবন। একই লাইনে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর রেস্টহাউজ, বিজিবি রেস্টহাউজ ও সম্প্রতি নির্মিত স্টারমানের আরও একটি সুরম্য স্থাপনা। ওদিকে কলাতলীতে পাঁচতারাকা হোটেল রিসোর্টসহ আরও বেশ কিছু হোটেল ও স্থাপনা।
অভিজ্ঞজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বর্ষা মৌসুমে সাগরে পানি বাড়ে। তবে ভাঙন এরকম তীব্র হয়না। আর অতীতে কোন সময় এধরনের ভাঙন দেখা যায়নি সৈকতে।
অনেকের মতে কক্সবাজারের বালুকাময় সৈকত কোন ধরনের স্থাপনা গ্রহণযোগ্য নয়। নাজিরারটেক থেকে- ইনানী পর্যন্ত বালুকাময় সৈকতে যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তাতে সাগর ফুঁসে ওঠে। এরকম অনেক নজির অতীতে রয়েছে।
সম্প্রতি কক্সবাজার লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত সৈকতের একেবারেই কাছে গড়ে উঠেছে অনেক সুরম্য অট্টালিকা। অভিজ্ঞজনেরা মনে করছেন এই কারণেই সৈকতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
এছাড়াও কক্সবাজার সৈকত এবং দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করে যেকোনো বহুতল ভবন নির্মাণে রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা। এছাড়াও এই পর্যন্ত কোন নিষিদ্ধ এলাকায় যে সকল বহুতল সুরম্য অট্রালিকা নির্মিত হয়েছে এগুলো ভেঙে ফেলার নির্দেশ থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে না।