৪২ রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে

উখিয়ায় সেনাবাহিনী ও শিক্ষার্থীদের তৎপরতায় শৃঙ্খলা ফিরেছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে

fec-image

বিরাজমান পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে কক্সবাজারের উখিয়া ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কার্যক্রম।

যানজট নিরসনে রাস্তায় নেমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গাড়ি তল্লাশি করে ক্যাম্প থেকে বের হওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে ক্যাম্পে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেখা গেছে সেনাবাহিনীর তৎপরতাও।

৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উখিয়া সদর, কুতুপালং, কোর্টবাজার, মরিচ্যা বাজারে অবস্থান নিয়ে শুরু হয় যানজট নিরসন, বাজার মনিটরিং, সড়কের ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কার্যক্রমও পরিচালনা করতে দেখা গেছে সারাদিন।

সড়কে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, ‌’সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নাই। তাই সড়কে যান চলাচলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছিল। তাই আমরা ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করছি। আমাদের দেশ সুন্দর, সুশৃঙ্খলভাবে আমাদেরই গড়ে তুলতে হবে।’

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী উখিয়ার শিক্ষার্থী হাসেম সিকদার জিসান বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং যানযট নিরসনের জন্য একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। তারই ধারাবাহিকতায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উখিয়ার বিভিন্ন স্টেশনে পূর্বঘোষিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং যানযট নিরসনের কর্মসূচি পালন করছি।

তিনি আরো জানান, ‘গাড়ি তল্লাশি করে ক্যাম্প থেকে বের হওয়া রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীর সহায়তায় ক্যাম্পেই ফেরত পাঠানো হচ্ছে। পুরো উখিয়াকে বিভিন্ন অপরাধ ও দুর্নীতি মুক্ত করতে আমরা শিক্ষার্থীরা কাজ করে যাব।’

এছাড়াও দেখা গেছে, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এমন রোহিঙ্গাদের প্রতিরোধ করতে উখিয়া-টেকনাফ মহাসড়কে গাড়ি তল্লাশি করতে চেকপোস্ট বসিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ক্যাম্প থেকে বের হওয়া ৪২ রোহিঙ্গাকে ইতোমধ্যে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কার্যক্রমও স্বাভাবিক হয়েছে। ক্যাম্পগুলোর চেকপোস্টে এপিবিএনের পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে সেনাসদস্যরা।

সেনাবাহিনীর উখিয়া সমন্বয়কারী সেলের প্রধান কর্মকর্তার (টাস্ক গ্রুপ কমান্ডার) দায়িত্ব পালন করছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশফাকুর রহমান।

সেলটির অফিসার ইন চার্জের দায়িত্বে আছেন ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ মঈনুল হাসান অনিক, যিনি ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে উখিয়ার ১১টি ক্যাম্প যথাক্রমে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং ১ ইস্ট ও ওয়েস্ট, ২ ইস্ট ও ওয়েস্ট, ৩, ৪, ৪ এক্সটেনশন, ৫, ৬, ৭, নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় সমন্বয় করছেন।

মুঠোফোনে তিনি জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনা সদস্যরা নিয়োজিত আছেন এবং চেকপোস্ট ও ক্যাম্পগুলোর আশেপাশে টহল জোরালো রাখার পাশাপাশি নিরাপত্তাজনিত যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতা করবে সেনাবাহিনী।

এপিবিএন’র অধিনায়ক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) মো. আমির জাফর বলেন, ‘সেনাবাহিনীও রোহিঙ্গা মানবিক কর্মসূচি’র সকল দেশি-বিদেশি অংশীজনদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে ক্যাম্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে পুলিশ ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করে সবার সাথে মতবিনিময় করছি।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন