উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৯৯ লাখ টাকার দরপত্রে কারসাজি!

fec-image

প্রায় তিন লক্ষ মানুষের বাস কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা উখিয়ায়, সাথে আছে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা ২৬ ক্যাম্পে আশ্রিত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গার বাড়তি চাপ।

বিশাল জনসংখ্যার ২৬১ কিলোমিটারের এই জনপদে স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি প্রাণকেন্দ্র উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদারের অনিয়মে বেহাল দশা বিরাজ করছে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে।

২০২০-২১ অর্থবছরে ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য-পথ্য লেলিন সামগ্রী সরবরাহের ঠিকাদারি হাতিয়ে নেন আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সাবেক বিতর্কিত মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলমের ছোট ভাই উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা সুরুত আলম।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএস) ডাক্তার রনজন বড়ুয়া রাজনের সহযোগিতায় গত ৫ বছর ধরে নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ সহ নানা অনিয়ম করে বিপুল পরিমাণ অর্থের দুর্নীতি করেছে সুরুত আলমের প্রতিষ্ঠান এন এন এন্টারপ্রাইজ।

অভিযোগ আছে, ডাক্তার রাজন প্রতিবছর দরপত্রে কারসাজির মাধ্যমে সুরুত আলমকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন।

সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য কথিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয় গত জুন মাসে, কোনো দরপত্র জমাদান কারী না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বর্ধিত করা হয়েছে সুরুত আলমের সাথে চুক্তি।

অনুসন্ধান বলছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও পিপিআর ২০০৮ বিধিমালা যথাযথ অনুসরণ না করে বাৎসরিক প্রায় ৯৯ লক্ষ টাকা বাজেটের এই দরপত্র কুক্ষিগত করা হয়েছে।

দরপত্র বিজ্ঞপ্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গানো হয় নি, কয়েকটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও প্রকাশের দিন পত্রিকাগুলোর সবকপি কিনে নেয় কারসাজিতে জড়িত সিন্ডিকেট।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ডাক্তার রনজন বড়ুয়া রাজন নিজেকে জাহির করতেন, অনিয়ম নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে সেটি সামলে নিতে রাজনের আরেকটি শক্তি ছিল সুরুত আলমের মাধ্যমে তার ভাই সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিবের ক্ষমতা ব্যবুহার।

দরপত্র প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মুঠোফোনে ডাক্তার রাজন বলেন, “নিয়ম মেনেই দরপত্র দেওয়া হয়েছে, একমাত্র জমাদানকারী সুরুত আলম এর এন এন এন্টারপ্রাইজ পুনরায় দায়িত্ব পেয়েছেন।”

ঠিকাদারের সাথে সখ্যতা ও দুর্নীতি প্রশ্নে ” দাপ্তরিকওয়েতে অনুসন্ধান করতে আসেন ” বলে আর কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবে ডায়েট চার্ট

অনুসরণ না করেই রোগীদের কে সরবরাহ করা হয় নিম্নমানের খাদ্য, ফার্মের মুরগী এনে ২০-২৫ দিন ফ্রিজে সংরক্ষণের মাধ্যমে করা হয় রান্না।

গত ১০ অক্টোবর রাতে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ হওয়ায় ভর্তি করানো হয় স্থানীয় এক বাসিন্দাকে।

ঐ রোগীর আত্মীয় জানান, “হাসপাতাল থেকে যে খাদ্য দেওয়া হয় সেগুলো কোনো মানের না, উলটো ঐগুলো খাওয়ালে রোগী আরো অসুস্থ হয়ে যাবে।”

অন্যদিকে ঠিকাদার সুরুত আলম জানান তিনি লোকসানে আছেন। তিনি দাবি করেন এবার কোনো দরপত্র জমা দেননি এবং অন্য কেউ না থাকায় তাকে সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হয়েছে।

সুরুত আলম বলেন, “আমাকে একটি ডিম যদি ১৩ টাকায় কিনতে হয় তাহলে বিল পাই ১১ টাকা। প্রচুর লোকসান হয়েছে আমার। টিএসের অনুরোধে সরবরাহ অব্যাহত রেখেছি।”

অনিয়ম ও দরপত্রের দুর্লভ কারসাজি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার।

তিনি বলেন, “উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দরপত্র বিষয়ে একটি গ্যাপ আছে। আমরা জনগণের সেবায় নিয়োজিত, এখানে কোনো দুর্নীতি অনিয়মের সুযোগ নেই। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে ২০১৬ সালে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তৎকালীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঐশী কনস্ট্রাকশনের বিরুদ্ধে ১৫ লক্ষ টাকা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ উঠলে বাতিল হয় ঐ প্রায় তিন লক্ষ মানুষের বাস কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা উখিয়ায়, সাথে আছে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা ২৬ ক্যাম্পে আশ্রিত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গার বাড়তি চাপ।
বিশাল জনসংখ্যার ২৬১ কিলোমিটারের এই জনপদে স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি প্রাণকেন্দ্র উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদারের অনিয়মে বেহাল দশা বিরাজ করছে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে।
২০২০-২১ অর্থবছরে ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য-পথ্য লেলিন সামগ্রী সরবরাহের ঠিকাদারি হাতিয়ে নেন আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সাবেক বিতর্কিত মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলমের ছোট ভাই উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা সুরুত আলম।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএস) ডাক্তার রনজন বড়ুয়া রাজনের সহযোগিতায় গত ৫ বছর ধরে নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ সহ নানা অনিয়ম করে বিপুল পরিমাণ অর্থের দুর্নীতি করেছে সুরুত আলমের প্রতিষ্ঠান এন এন এন্টারপ্রাইজ।
অভিযোগ আছে, ডাক্তার রাজন প্রতিবছর দরপত্রে কারসাজির মাধ্যমে সুরুত আলমকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন।
সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য কথিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয় গত জুন মাসে, কোনো দরপত্র জমাদান কারী না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বর্ধিত করা হয়েছে সুরুত আলমের সাথে চুক্তি।
অনুসন্ধান বলছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও পিপিআর ২০০৮ বিধিমালা যথাযথ অনুসরণ না করে বাৎসরিক প্রায় ৯৯ লক্ষ টাকা বাজেটের এই দরপত্র কুক্ষিগত করা হয়েছে।
দরপত্র বিজ্ঞপ্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গানো হয় নি, কয়েকটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও প্রকাশের দিন পত্রিকাগুলোর সবকপি কিনে নেয় কারসাজিতে জড়িত সিন্ডিকেট।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ডাক্তার রনজন বড়ুয়া রাজন নিজেকে জাহির করতেন, অনিয়ম নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে সেটি সামলে নিতে রাজনের আরেকটি শক্তি ছিল সুরুত আলমের মাধ্যমে তার ভাই সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিবের ক্ষমতা ব্যবুহার।
দরপত্র প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মুঠোফোনে ডাক্তার রাজন বলেন, “নিয়ম মেনেই দরপত্র দেওয়া হয়েছে, একমাত্র জমাদানকারী সুরুত আলম এর এন এন এন্টারপ্রাইজ পুনরায় দায়িত্ব পেয়েছেন।”
ঠিকাদারের সাথে সখ্যতা ও দুর্নীতি প্রশ্নে ” দাপ্তরিকওয়েতে অনুসন্ধান করতে আসেন ” বলে আর কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবে ডায়েট চার্ট
অনুসরণ না করেই রোগীদের কে সরবরাহ করা হয় নিম্নমানের খাদ্য, ফার্মের মুরগী এনে ২০-২৫ দিন ফ্রিজে সংরক্ষণের মাধ্যমে করা হয় রান্না।
গত ১০ অক্টোবর রাতে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ হওয়ায় ভর্তি করানো হয় স্থানীয় এক বাসিন্দাকে।
ঐ রোগীর আত্মীয় জানান, “হাসপাতাল থেকে যে খাদ্য দেওয়া হয় সেগুলো কোনো মানের না, উলটো ঐগুলো খাওয়ালে রোগী আরো অসুস্থ হয়ে যাবে।”
অন্যদিকে ঠিকাদার সুরুত আলম জানান তিনি লোকসানে আছেন। তিনি দাবি করেন এবার কোনো দরপত্র জমা দেননি এবং অন্য কেউ না থাকায় তাকে সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হয়েছে।
সুরুত আলম বলেন, “আমাকে একটি ডিম যদি ১৩ টাকায় কিনতে হয় তাহলে বিল পাই ১১ টাকা। প্রচুর লোকসান হয়েছে আমার। টিএসের অনুরোধে সরবরাহ অব্যাহত রেখেছি।”
অনিয়ম ও দরপত্রের দুর্লভ কারসাজি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার।
তিনি বলেন, “উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দরপত্র বিষয়ে একটি গ্যাপ আছে। আমরা জনগণের সেবায় নিয়োজিত, এখানে কোনো দুর্নীতি অনিয়মের সুযোগ নেই। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে ২০১৬ সালে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তৎকালীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঐশী কনস্ট্রাকশনের বিরুদ্ধে ১৫ লক্ষ টাকা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ উঠলে বাতিল হয় ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন