স্থানীয়দের পাশাপাশি বিশাল রোহিঙ্গার চাপের কারনে উখিয়ায় শাক-সবজির চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। হাটবাজারে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজির ভাল দাম পাওয়ার সুবাধে কৃষকেরা আমন-বোরোর মাঝামাঝি সময়ে কৃষি জমিতে এবার আলু ও সবজি উৎপাদন করে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। যার কারনে চলতি মৌসুমে আলু চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে গেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিমত, চাষাবাদে ইউরিয়া ও টিএসপি সংমিশ্রিত ডিএপি সার প্রয়োগসহ আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারনে ৯ হাজার মেঃ টন আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমনের ফলন কাটার পরপরই অর্থাৎ নভেম্বর মাসে সবজি চাষাবাদের লক্ষ্যে কৃষকেরা একই জমিতে আলুসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষাবাদ করে থাকে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ৫ ইউনিয়নে প্রায় ৫ শত হেক্টর জমিতে আলুর চাষাবাদ হয়েছে। পাশাপাশি ২ থেকে আড়াই’শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত এসব তরি-তরকারী ন্যায্য মূল্য পাওয়ার সুবাধে অনেকেই শুধুমাত্র শাক-সবজি চাষাবাদের মাধ্যমে আর্থিকভাবে অনেকে লাভবান হয়েছে।
স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত তরি-তরকারীসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি এখানকার হাটবাজার গুলোতে বেচা-কেনা হলেও স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত সবজির চাহিদা এখানে প্রচুর। তাই কৃষকেরা মাঠের ধান ঘরে তোলার সাথে সাথে সবজি চাষাবাদের জন্য জমি তৈরিসহ আনুসাংগিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। সম্প্রতি রাজাপালং ইউনিয়নের ডিগলিয়া পালং, করইবনিয়া, চাকবৈঠা, টাইপালং, দরগাহবিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ সবুজের সমারোহ। তবে সবজি চাষাবাদের পাশাপাশি বেশির ভাগ জমিতে আলু চাষাবাদ করতে দেখা গেছে। নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, যুবক-যুবতি, উৎপাদিত আলু বাজারজাত করার জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক ছব্বির আহমদ (৪০) ছৈয়দ আহমদ (৩৯) জানান, নতুন আলু’র ব্যাপক চাহিদা থাকার কারনে ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে। তাই আগে-ভাগেই আলু উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছি। তারা আরো জানান, দালাল ফড়িয়ারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে আলু ক্রয়ের জন্য আগাম টাকা দিতে কৃষকদের ঘরে ঘরে ধরনা দিচ্ছে। তারা যে আলু প্রতি কেজি ২০/২৫টাকা দরে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করছে সে আলু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০ টাকা দরে। অনেকেই টাকার লোভে ফড়িয়াদের আলু বিক্রি করে ঠকছে বলে মতামত ব্যক্ত করছেন।
স্থানীয় কৃষক কামাল উদ্দিন (৩০) জয়নাল আবেদিন (৪৪) জানান, গত ২ দিন ধরে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। নতুন আলু ও শাক-সবজি বিক্রি করে আর্থিক লাভবান হয়েছেন। তারা আরো জানান, আমন চাষাবাদে যে পরিমান অর্থ ব্যয় ও শ্রম দিতে হয় আলু চাষাবাদ তেমন কোন খরচ হয় না পাশাপাশি আনুসাংঙ্গিক উপকরণ নিয়ে ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়না। এ কারনে অধিকাংশ কৃষক পতিত জমিতে এবার আলুসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে উঠেছে।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. শাহ জাহান, চলতি মৌসুমে আলু চাষাবাদে কৃষকেরা ডিএপি ও সুষম সার প্রয়োগ করার কারনে আলু’র উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও কৃষি বান্ধব সরকার ডিএপি সারের মূল্য হ্রাস করায় সুষমবন্টনে কৃষকেরা আলু ও সবজি ক্ষেতে সার প্রয়োগ করায় এবার আলু চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে।