parbattanews

উখিয়ায় রিপার মেশিন অকার্যকর, ধান কাটা নিয়ে বিপাকে কৃষক

উখিয়ার পূর্বডিগলিয়াপালং গ্রামের মাঠে পাঁকা ধান

বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে দেশে লকডাউনের কারনে শ্রমিক সংকটে পড়ে বোরো ধান ঘরে তুলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে উখিয়ার কৃষকেরা। বিকল্প হিসেবে হোন্ডা রিপার মেশিন (ধান কাটার যন্ত্র) গুলোও অকার্যকর হওয়ায় কৃষকের কোন কাজে আসছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে প্রশিক্ষিত লোক না থাকায় অধিকাংশ রিপার মেশিনগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছেনা।

সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গার কারনে ক্ষতিগ্রস্থ উপজেলা হিসেবে উখিয়ায় ২০১৭ সালে ২৫টি হোন্ডা রিপার মেশিন (ধান কাটার যন্ত্র) সরবরাহ করে ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন নামের একটি ইউএন সংস্থা।

প্রতিটি মেশিনের দাম প্রায় ২ লাখ টাকা। কিন্তু এসব ধান কাটার যন্ত্রগুলো প্রকৃত কৃষক সংগঠনকে না দিয়ে বিতরণের দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিরা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে নাম সর্বস্ব কতিপয় সংগঠনের লোকজনকে বিতরণ করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ অন্যান্য কৃষকদের।

হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পাতাবাড়ি এলাকার কৃষক বদি আলম বলেন, ধান কাটার রিপার মেশিনগুলো বিতরণের সময় প্রকৃত কৃষক সমিতি অথবা প্রশিক্ষিত লোকজনকে না দেওয়া কৃষকদের এমন দুর্যোগ মুহুর্তে কাজে আসছেনা। করোনার লকডাউনের শ্রমিক সংকটে পড়ায় বোরো ধান ঘরে তুলা নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকেরা।

রাজাপালং ইউনিয়নের ডিগলিয়া পালং গ্রামের কৃষক ফকির আলম বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু লকডাউনে শ্রমিক না পাওয়ায় ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। তার মতো আরো অনেকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে হতাশায় ভোগতে দেখা গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, যে সমস্ত নাম সর্বস্ব কৃষি সংগঠনকে হোন্ডা রিপার মেশিন (ধান কাটার যন্ত্র) সরবরাহ করেছে এসবের মধ্যে অধিকাংশ সংগঠনের কোন অস্থিত্ব নেই। যা বিতরণের পরপরই অন্যত্রে বিক্রি করে দিয়েছে।

আর কিছু মালিকানার কাছে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে বিআরডিবি’র বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গুরুতর। কারণ বিআরডিবি’র তৈরীকৃত তালিকা অনুযায়ী এই রিপার মেশিনগুলো বিতরণ করেছিল ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন।

উখিয়া পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. খুরশেদুল আলম বলেন, ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে যে উখিয়ায় ২০১৭সালে ২৫টি রিপার মেশিন বিতরণ করেছিল। তৎমধ্যে বিআরডিবি’র সমিতিকে ২০টি এবং কৃষক সমিতিকে ৫টি।

এগুলো চালানোর জন্য কাউকে প্রশিক্ষণ না দেওয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। বর্তমানে তারা ৭টি রিপার মেশিন (ধান কাটার যন্ত্র) স্বচ্ছল করলেও বাকীগুলো অচলাবস্থায় বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে।

তিনি বলেন, একত্রে এই রিপার মেশিন গুলো কাজে লাগাতে পারলে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবানের পাশাপাশি দ্রুত সময়ে পাকা ধান ঘরে তোলা সম্ভব হত।

উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন বড়ুয়া জানান, লকডাউনের কারনে শ্রমিক সংকট হলেও তাদের বিষয়ে বিকল্প চিন্তা করছে সরকার। কিন্তু এখনো কোন ধরনের নির্দেশনা সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি।

রিপার মেশিন দিয়ে ধান কাটার ব্যাপারে তিনি বলেন, বর্তমানে ৭/৮টির মত মেশিন চালু করা হয়েছে। আর কিছু মেশিন প্রশিক্ষিত চালক না থাকায় বিকল অবস্থা রয়েছে। তবে যে সমস্ত কৃষকের এধরনের সহযোগিতা দরকার হবে তাদের অবশ্যই ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Exit mobile version