উদ্বোধনের অপেক্ষায় চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল ব্রীজ
কক্সবাজার জেলা শহরের সাথে বৃহত্তর ঈদগাঁও’র দূরত্ম কমবে ১৫ কিলোমিটার
আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:
প্রস্তাবিত কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকুলীয় আঞ্চলিক মহাসড়কের চৌফলদন্ডী খালের উপর ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল’ ব্রীজের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণ কাজ উদ্বোধন হওয়ার পর তা শেষ করতে লেগেছে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর সময়। তবে এখনও বাকী এপ্রোচ সড়কের সড়কের কাজ। এমনকি ব্রীজের দুপাশের রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। রাস্তা সংস্কার করে এ সড়কে পুরোদমে যান চলাচল শুরু হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্র জানায়, কক্সবাজারের উপকুলীয় এলাকা বিশেষ করে চৌফলদন্ডী, জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, ঈদগাঁও, পোকখালী, ইসলামপুর, খুটাখালী, ঈদগড়সহ কক্সবাজার সদর ও রামুর একাংশ এবং চকরিয়ার সাথে জেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজতর করার লক্ষ্যে ২০০৩-০৪ অর্থসালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় চৌফলদন্ডী খালের উপর ১৮০ মিটার দীর্ঘ একটি ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বিগত ২০০৪ সালের ৪ এপ্রিল কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী অংশে এ ব্রীজের নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। পরে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ করতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। বর্তমানে এ ব্রীজটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকলেও দুপাশের রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় এ ব্রীজের সুফল পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, চৌফলদন্ডী খালের উপর বহুল প্রত্যাশিত ব্রীজটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ব্রীজের দুপাশের এপ্রোচ সড়কের কাজ এখনও বাকী। এছাড়া ব্রীজের দক্ষিণ পাশে খুরুস্কুল হতে কক্সবাজার শহর প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। যার কারণে এ সংক্ষিপ্ত পথ পাড়ি দিতে প্রায় আধ ঘন্টা সময় লেগে যাচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা পরিষদ প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী জানান, এ ব্রীজটি নির্মাণের জন্য তিনি ১৯৯৬ সালে তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী (সদ্য পরলোকগত রাষ্ট্রপতি) জিল্লর রহমানের বরাবরে আবেদন করেন। কিন্তু বিশাল ব্যয় সাপেক্ষ হওয়ায় বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হতে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ ব্যপারে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু গত ৪ দলীয় জোট সরকারের সময় অজ্ঞাতকারণে এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান মহজোট সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার (মোস্তাক আহামদ চৌধুরী) পুনরায় চেষ্টা-তদবিরের ফলে আবারো নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আগামী জুলাই মাসে কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফরের সময় ব্রীজটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
এদিকে বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, চারদলীয় জোট সরকার প্রকল্পটি গ্রহণ করে এবং ব্রীজের এক তৃতীয়াংশ কাজও শেষ করে।
তিনি জেলা পরিষদ প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, চৌফলদন্ডী ব্রীজের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে ২০০৪ সালের ৪ এপ্রিল আমি চৌফলদন্ডীতে গেলে বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক দলবল নিয়ে আমাকে স্বাগত জানান। উদ্বোধন শেষে তাঁর বাসায় আমি দাওয়াতও গ্রহণ করি। কিন্তু জোট সরকারের আমলে কখনও কাজ বন্ধ থাকেনি। এমনকি সাময়িকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষার জন্য ফেরী চালুও করা হয়।