সুবিধার শর্ত আবার শিথিল

ঋণমুক্ত হওয়ার নীতিমালায় দুই জায়গায় ছাড়

fec-image

ঋণ খেলাপিদের থেকে টাকা আদায়ে দেওয়া সুবিধার শর্ত আবার শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘ঋণমুক্ত’ হতে আগের সরকারের সময়ে দেওয়া ‘এক্সিট পলিসিতে’ আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় এবার এককালীন পরিশোধের (ডাউনপেমেন্ট) অর্থের পরিমাণ বিদ্যমান ঋণ স্থিতির ১০ শতাংশের বদলে ৫ শতাংশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের পাঠিয়েছে। কোনো ঋণ গ্রহীতা এ সুবিধা নিতে আবেদন করলে তা ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে ঋণের একাংশ পরিশোধ হলেও আগের মত ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ পাবেন না তারা। পুরো ঋণ শোধ না হওয়া পর্যন্ত খেলাপি গ্রাহক ‘খেলাপি’ হিসেবেই চিহ্নিত হবেন। এই সময়ে তিনি নতুন কোনো ঋণও পাবেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, খেলাপি হয়ে যাওয়া ঋণ গ্রহীতাদের থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ার জন্য এক্সিট পলিসিতে ডাউনপেমেন্টের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খেলাপি ঋণে জর্জরিত ব্যাংক খাত থেকে বের হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে ২০২৪ সালের জুলাইতে নতুন এ নীতিমালা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এটিকে ‘এক্সিট পলিসি’ পলিসি বলা হয়েছিল। নতুন করে নীতিমালায় দুই জায়গায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ঋণের ৫ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে সর্বোচ্চ তিন বছরে পুরো টাকা পরিশোধের কথা বলা হয়েছে। আগের সার্কুলারে এটা ১০ শতাংশ ছিল।
দ্বিতীয়ত, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটি অনুমোদন করলেই এ সুবিধা মিলবে। তবে মূল ঋণের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত এক্সিট সুবিধা দেওয়ার অনুমোদন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দিতে পারবে; আগে এটা ছিল ১০ লাখ টাকা।
এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধ সূচি তৈরি করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের বেশি হবে না। তবে পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসঙ্গত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বাড়াতে পারবে।
এ সুবিধা নেওয়ার পর গ্রাহক পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ আদায়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন