এক হাজারেরও বেশি বাঙালি পরিবারকে হত্যা করেছে জেএসএস: কেএনএফ

fec-image

জেএসএস সন্ত্রাসীরা শুরু থেকে ইসলামের বিরোধিতা করে আসছে মন্তব্য করে কেএনএফের পক্ষ থেকে বান্দরবানের সাম্প্রতিক যৌথবাহিনীর অপারেশন এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় লে. পাবিক নামে কেএনএ’র এক সদস্য সবাইকে নমস্কার জানিয়ে বলেন, ‘কেএনএফ কখনো সরকারে বিপক্ষে ছিল না। দেশের সরকার হিসেবে আমরা যতটুকু পারি সম্মান প্রদর্শন করে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছি। তাই আমরা পিছু হটেছি। এমনিতেও যৌথ বাহনীর উপর কেএনএফের হামলা করার কোনো ইচ্ছা ছিল না। কেএনএফের উচ্চমহলের নির্দেশে আমরা পিছু হটেছি।’

তিনি আরো বলেন,’জেএসএস সন্ত্রাসীরা শুরু থেকে ইসলামের বিরোধিতা করে আসছে। সেই পার্বত্য চুক্তির আগ থেকে। এর আগেও তাদের অনেক ইতিহাস আছে। তারা এক হাজারের বেশি বাঙালি পরিবারকে হত্যা করেছে। শুধু বাঙালি নয়, তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত মারমা, বম, তঙচঙ্গা, পাংখোয়া, খিয়াং ও মুরং জাতির অনেক গুণীজনদেরও হত্যা করেছে। তার প্রমাণ আপনারা ফেসবুকে বিভিন্ন জনের টাইমলাইনে দেখতে পাবেন।’

ভিডিও বার্তায় আরো বলা হয়েছে, ‘জেএসএস সন্ত্রাসীদের অভিযোগ, ইসলাম ধর্ম সম্প্রসারণ করার জন্য এ পাহাড়ের বুকে ইসলাম প্রচার করছে এবং কেএনএফ ক্যাম্পে ইসলামি গ্রুপ বা বিদেশি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গ্রুপদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এমন মিথ্যা তথ্য দিয়েই মূলত আমাদের ক্যাম্পে যৌথবাহিনী হামলা চালানোর ফন্দি আঁটে তারা। অথচ, কেএনএফের সাথে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততা নেই।’

ভিডিওতে জেএসএসের মিথ্যা ছড়ানোর ব্যাপারে অভিযোগ তুলে বলা হয়, ‘জেএসএসের মূল দাবি ছিল, পার্বত্য চট্টগ্রামের সামরিকায়ন এবং ইসলামের স¤প্রসারণ বন্ধ করা। কিন্তু সেই জেএসএসের মিথ্যা তথ্যানুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো জাতির উপর অভিযান চালানো কি সাংঘর্ষিক নয়? শান্তিচুক্তির ৪০ [২৪ বছর হবে] বছরের বেশি হলেও সেই চুক্তির বাস্তবায়নে বড় বাধা জেএসএসের সন্ত্রাসী সভাপতি সন্তু লারমা নিজেই। চুক্তিতে অস্ত্র জমা দেয়ার কথা থাকলেও সন্তু লারমার নেতৃত্বে নষ্ট হয়ে যাওয়া এবং ব্যবহারের
অযোগ্য অল্প কিছু অস্ত্র জমা দিয়েছে।’

সা¤প্রতিক অপারেশনের প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়েছে, ‘গত ১২ অক্টোবর যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় মূলত জেএসএস সদস্যরাই সেনাবাহিনীর উপর গুলি করেছিলো এবং সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত কয়েকটি অস্ত্র কেড়ে নিয়েছিলো। তবে সেই দায়ভার কেএনএফের উপর চাপানো হয়।’

ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ এবং গ্রুপে প্রচারিত প্রচারিত ভিডিওটি কেএনএফের কিনা সে ব্যাপারে কেএনএফ কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে সংগঠনের

সিনিয়র নেতা লে. কর্ণেল মাওয়ি ভিডিওটির সত্যতা স্বীকার করেন। তাছাড়া ভিডিওতে কেএনএফের পক্ষ থেকে কথা বলা লে. পাবিক এবং তার দুই পাশে দাঁড়ানো দুই সদস্যের গায়ের সামরিক পোশাক এবং প্রদর্শিত অস্ত্র দেখেও দেখেও পর্যবেক্ষক মহল এটাকে কেএনএফের পক্ষ থেকে প্রচারিত
ভিডিও বলেই মনে করছেন।

তবে ভিডিওটি কি দেশের ভেতরে ধারণ করা হয়েছে নাকি বাইরে থেকে প্রচারিত হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি লে. কর্নেল মাওয়ি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কেএনএফ, জেএসএস, বাঙালি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন