এখন কেন সেনাবাহিনীর দরকার?


৫জন পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীকে খাগড়াছড়ির গিরিফুল থেকে অপহরণ করেছে আরেক পাহাড়ি সংঘঠন ইউপিডিএফ। অপহৃতরা জেএসএস র ছাএ সংগঠন পিসিপির সদস্য।
পাহাড়ি জেএসএস ‘র তাবেদার ছাএ সংগঠন গুলো সারা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অনুসারীদের নিয়ে নেট গরম করছে। এদের নানাবিধ সংগঠন অনলাইন পেইজ থেকে ‘অষ্টপ্রহর মহানাম জপের’ মত পাহাড় থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার দাবী করে।
পুরো পানছড়ি-সদর খাগড়াছড়ি এলাকায় আগে ৮ টি ক্যাম্প ছিলো এখন আছে দুটি। অতএব বিশাল এলাকা নজরদারির বাইরে। রাস্তার অবস্থা বেহাল, খানাখন্দে ভরা।
‘সেনা হটাও ‘ এদের যজ্ঞনাম। এখন দেখলাম যৌথ বাহিনী নামছে।
আমার প্রশ্ন এখন সেনাবাহিনী কেন লাগে? পাহাড়ে শত অপকর্মের পর এরা সেনাবাহিনী কে দায়ী করবে-পাহাড়ের অনাবৃষ্টি, ফসল হানী, ভ্রাতৃঘাতী হত্যা মায় নারীর প্রসবজনিত জটিলতা,,,, তারজন্যও সেনাবাহিনী দায়ী।
নগদের উপর খুন করবে আর দাবি করবে সেনা মদদে এসব হচ্ছে। পাহাড়ে সেনাবাহিনী দেখামাএ বলবে সেনাবাহিনী প্রতিদিন শত শত নারীকে রেইপ করে,,,মানে সেনাবাহিনীর টহল বোধহয় ট্রাউজারের জিপার খুলে চলাফেরা করে।
ভাবুন তো একবার এভাবে রেইপ হলে পাহাড়ের কোন নারী কি অক্ষত থাকে? সবার তো ডিএনএ টেস্ট করা দরকার হয়ে পড়ে।
চাকমারা সেনাবাহিনী কে চাকরির জন্য উত্তম মনে করে, সেনাবাহিনী পরিচালিত সকল স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লাইন দিবে। তখন সেনা ভালো। এখন নিজেদের মধ্যে কোপাকুপিতে লিপ্ত হয়ে সেনাবাহিনী কে দোষারোপ করে।
এসব অপহরণ সেনাই করায়। ভাইয়ে ভাইয়ে সেনাবাহিনী বিভেদ সৃষ্টি করায়। দেখুন কি রকম বেকুবি মার্কা কথা। এতোটাই আবাল, ওরা কিছু বোঝে না। সেনাবাহিনীতে আজীবন রেশনখোর এক চাকমা ব্রিগেডিয়ার ‘কুয়াশা’ কে দেখলাম প্রসীত খীসা সম্পর্কে মন্তব্য করতে।
তার নাম নাকি উনি শোনেননি কোন দিন। সরকার (প্রকারন্তে সেনাবাহিনী) নাকি পাহাড়ের সকল সংঘাতের পিছনে। সেজন্যই তো আজকে যৌথ বাহিনীর অভিযানের আমি বিরোধী। সেনাবাহিনী যেহেতু খারাপ তো পাহাড়ে অভিযানের দরকার কি।
পাহাড়িরা নিজেরাই বের করুক অপহৃতরা কোথায় আছে। কোন পাহাড়ি কোন দিন এসব বিষয়ে মুখ খোলে না। আকারে ইঙ্গিতেও নয়। শুধু বলবে, মুই হিচ্ছু না জানং, মুই হিচ্ছু ন দেহী!
২০০৫ সালে এই গিরিফুল সংলগ্ন পেরাছড়ায় সিভিল গাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর তাজা রশদের এক পেটী মাছ নামিয়ে রাখে। দিনের আলোতে শত মানুষের সামনে। কেউ কিছু দেখেনি,,কেউ কিছু শোনেনি।
এরপর বাটাম খাওয়ার পর সূড় সূড় করে সে মাছের পেটি ক্যাম্পে এসে দিয়ে যায়। আজ যে অপহরণের ঘটনা ঘটলো এই পাঁচজনে কোথায় কোন পাহাড়ে কোন জুম ঘরে বা কার বাড়িতে আছে সবাই জানে। পাহাড়ে যারা সেনাবাহিনীতে অপারেশন করেছে তারা জানে পাহাড়ি দের মনস্তত্ত্বকে। এরাই ঠিক ঠিক জেএসএস র সশস্ত্র গ্রুপরে পাল্টা বাটাম খেয়ে বলে দিবে ‘মৈএীময় ‘ চাকমাদের কোথায় লুকিয়ে রেখেছে তাদেরই জুম্মা ভাইরা।
পাহাড়ের কেউ অপহৃত হলে মুক্তিপন দিয়ে ছাড়িয়ে আনা শত বছরের প্র্যাক্টিস। মুক্তি পন না চাইলে নিশ্চিত মৃত্যু। এই গিরিফুল সংলগ্ন ৩নং রাবার বাগান থেকে ১৯৮৬ সালে চবাই মগ কে অপহরণ করা হয়।
এই চবাইমগ মারমা গোএের, সন্তুর সাথে এক সাথে কারাগারে ছিলো। ১৯৮০ সালে জেনারেল মন্জর শান্তির স্বার্থে চবাই সহ সন্তুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনেন। মুক্তি পেয়ে সন্তু পুনরায় শান্তি বাহিনীর সশস্ত্র কমান্ডার হোন। চবাই মগ মারমা উন্নয়ন সংস্থা নামক সংগঠন তৈরি করে সশস্ত্র লাইন থেকে বের হয়ে যান। চবাই মগকে সন্তু লারমা বাড়ি থেকে ডেকে আনেন।
মটরসাইকেলসহ রাবার বাগানের গহীনে হারিয়ে যায় চবাই মগ। অপহরণ ও হত্যা পাহাড়ি জাতির বৈশিষ্ট্য। লুসাইরা উনিশ শতকরে মধ্য ভাগে কাপ্তাই থেকে ফেনী উপাত্যাক্কা পর্যন্ত চাকমা মারমা এিপুরা দের হত্যা অপহরণ করে দাসে পরিনত করা শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া সহ অত্যাচারে লিপ্ত ছিলো।
চাকমা রানী কালিন্দীর ভাইপো এবং তার দেওয়ানরা ভাড়াটে কুকিদের দিয়ে ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষে জড়িত ছিলো ১৮৬০ সাল পর্যন্ত। যার প্রেক্ষিতেই পার্বত্য চট্টগ্রাম কে মূল জেলা থেকে আলাদা করা হয়। ক্যাপ্টেন টি এইচ লুয়েন প্রথম সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসাবে বৃটিশ সেনা শাসনের সূচনা করেন।
অপহরণ এবং উদ্ধারের এক চমৎকার বয়ান পাহাড়ের ইতিহাস গ্রন্থিত আছে, তা হলো মেরী উইনচেষ্টার নামক ৬ বছরের বৃটিশ কন্যার উদ্ধার অভিযানে বৃটিশ ক্যাপ্টেন লুয়েনের প্রানপত সাফল্যের কথা।
আশা করা যায় সে রকম কোন অভিযান যৌথ বাহিনী করলে মৈএীময় -দিব্যি চাকমারও উদ্ধার পাবে। তারপরও অপপ্রচার চলবেই সেনাবাহিনী রেইপ করে।
নাসিম