এটাও গতানুগতিক বাজেট : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

fec-image

‘দেশের ব্যাংক থেকে লোন নিলে ইন্টারেস্ট বেড়ে যায়। আবার ব্যক্তিখাতে লোনও কমে যায়। এর ফলে দেশে বিনিয়োগ হয় না, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় না, মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না।’

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মৌলিক জায়গায় গলদ রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আগের যেভাবে বাজেট চলে আসছে, সেখান থেকে সংখ্যার তারমাম্য হয়েছে কিন্তু বাজেটের প্রিন্সিপাল একই রয়ে গেছে। এটাও গতানুগতিক বাজেট।’

সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা জানান।

দলের পক্ষ থেকে আগামী ৪ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়া দেয়া হবে বলেও জানান আমীর খসরু।

আমীর খসরু বলেন, ‘বিগত সরকারের ধারাবাহিকতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার বের হতে পারেনি। রাজস্ব আয়ের ওপর ভিত্তি করে বাজেট করা উচিত। তাহলে প্রাইভেট সেক্টরে টাকার সরবরাহ থাকবে, বিনিয়োগ থাকবে, ইন্টারেস্ট কমে আসতো,

বিদেশী ঋণের পরিমাণ কমে আসতো ও সুদের হারও কম পেমেন্ট করতে হতো। কিন্তু আমরা সেই জায়গা থেকে সরে আসতে পারিনি। আমি মনে করি, এই মৌলিক জায়গায় গলদ রয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা সীমিত, কারণ তাদের একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নির্বাচিত সরকারের সাথে তাদের ক্ষমতার থাকার মেয়াদের ব্যবধান রয়েছে- এটা মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, বিগত সরকার বাজেটের আকার বাড়াতে বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেটার সাথে রাজস্ব আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।’

‘দ্বিতীয়ত, রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে ব্যয় হয়ে যাবে। উন্নয়ন বাজেট দেশের ভেতর বা বাইরে থেকে ঋণ নিয়ে চালাতে হচ্ছে। সরকার যখন দেশের বাইরের থেকে ঋণ নিলে এর বোঝা বাড়তে থাকে এবং বছরের পর বছর দেশের মানুষকে এই সুদ দিতে হয়। এই কারণেই কিন্তু দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ভুগতে থাকে।

আর দেশের ভেতরের থেকে নিলে আবার বেশি ক্ষতি। কারণ দেশের ব্যাংক থেকে লোন নিলে ইন্টারেস্ট বেড়ে যায়। আবার ব্যক্তিখাতে লোনও কমে যায়। এর ফলে দেশে বিনিয়োগ হয় না, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় না, মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না। প্রাইভেট সেক্টর লোন না পেয়ে অনেকে বিনিয়োগও করতে পারে না।

আমি মনে করি, রাজস্ব আয়ের সাথে বাজেটের আকারের একটা সম্পৃক্ততা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু এটা হয়নি। রাজস্ব আয় যেটা আছে তার পুরোটাই পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে চলে যাবে। দেশের বাইরে ও ভেতর থেকে লোন নিতে গেলে এসব প্রভাবের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘বর্তমানে বৈদেশিক ঋণ ৩.৫ বিলিয়নের মতো। আমি মনে করি, বিদেশী ঋণ ও রাজস্ব আয়কে মাথায় রাখলে এই বাজেটের আকার আরো ছোট হওয়া উচিত ছিল।

গুণগত দিক থেকে এই বাজেটে কোনো পরিবর্তন হয়নি, শুধু সংখ্যায় সামন্য পরিবর্তন হয়েছে। কাঠামো কিন্তু একই রয়েছে। সুতরা আগামী দিনে সরকারের জন্য সহজ কিছু হবে না।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন