সংস্কৃতি চর্চা প্রতিষ্ঠান উঠোন-এর উদ্যোগে

ঐতিহাসিক ২৩ মার্চ উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

fec-image

সংস্কৃতি চর্চা প্রতিষ্ঠান উঠোন-এর পক্ষ থেকে ২৩ মার্চ ঐতিহাসিক পতাকা দিবস উপলক্ষে ২৩ মার্চ ২০২৩ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে “একটি পতাকার জন্য” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।

সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি, লেখক ও গবেষক গোলাম কুদ্দুছ। সভাপতিত্ব করেন অলক দাশগুপ্ত। সূচনা বক্তব্য রাখেন উঠোন-এর সাধারণ সম্পাদক অনিকেত রাজেশ।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সমগ্র বাংলাদেশে (কেবলমাত্র গভর্নর হাউস ও ক্যান্টনমেন্ট এবং মিরপুর ও মোহাম্মদপুরের বিহারী অধ্যুষিত কিছু অংশ ব্যতিরেকে) স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। সচিবালয়সহ সমস্ত সরকারি বেসরকারি অফিস ও বাসাবাড়িতে এমনকি বিদেশী দূতাবাসসমূহেও সেদিন স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলিত হয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ওইদিন পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে গার্ড অব অনার নেন এবং সামরিক কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। পরে সেখান থেকে শোভাযাত্রা সহকারে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়ে তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বঙ্গবন্ধুর হাতে ওই পতাকাটি তুলে দেন।

এ সময় প্রথমেই জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সকাল ১০.৩০টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের স্বাধীনতা একদিনে আসেনি, এর পেছনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়েছে। ২৩ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দিন। এই গৌরবের ইতিহাসগুলোকে আমাদের স্মরণ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ৩ রা মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তৎকালীন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ। সেই সভার সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ২৩ মার্চ পল্টন ময়দানে মার্চপাস্ট করে পতাকা উত্তোলন করে এবং মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়ে সেই পতাকাটি তিনি বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেন। বঙ্গবন্ধু সেই পতাকাটি সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করেন। সেদিনটি এর আগে রিপাবলিক ডে অব পাকিস্তান হিসেবে পালিত হতো।

আলোচক সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ১৯৭১ এর মার্চে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যকে তাদের মুখে তুলে ধরত। সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতার কারণে যা তিনি বলতে পারতেন না, তাই ছাত্রলীগ নেতৃত্ব বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রকাশ করত।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক জাহীদ রেজা নূর।

অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি চর্চা প্রতিষ্ঠান উঠোন ও সুরতাল-এর শিল্পীগণ দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন। একক সংগীত পরিবেশন করেন আবিদা রহমান সেতু, মারুফ হোসেন, বর্ষা রাহা, সংগীতা ইসলাম ক্ষমা ও অনিমেষ নন্দী। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে সংবৃতা আবৃত্তি চর্চা ও বিকাশ কেন্দ্র। ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু, জয়ন্ত রায়, তারেক আলী মিলন, পলি পারভীন, মহিউদ্দীন শামীন, আনিসুর রহমান রিমন ও আদ্রিতা সরকার একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত গান ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের সাথে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডান্স ক্লাব। একক নৃত্য পরিবেশন করেন রেহানা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন