কক্সবাজারে আ.লীগ নেতার জামিন : আদালত ঘেরাও করে বিচারকের প্রত্যাহারে দাবি
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জের ধরে দায়ের করা হত্যাসহ তিনটি মামলায় জামিন পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সি আবদুল মজিদ শুনানি শেষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
এর প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা বুধবার বেলা ১২টার দিকে আদালত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বিচারকের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী ছাড়াও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা বক্তব্য রাখেন।
যদিও মঙ্গলবার মাসেদুল হক রাশেদের পক্ষে আদালতে জামিন শুনানিতে বিএনপি ও জামায়াতে অসংখ্য আইনজীবী অংশ নিয়ে ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আসামি পক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম সিদ্দিকীর জিম্মায় আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। মামলাটির জামিন শুনানিতে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম সিদ্দিকী ছাড়াও জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট শাহজালাল চৌধরী, আবদুল মান্নানও ছিলেন।
আবুল কালাম সিদ্দিকী বিএনপি-জামায়ত সমর্থিত প্যানেলে আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৫। পরে তাকে ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ১৭ আগস্ট কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিম মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। সেই মামলায়ও অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মাসেদুল হক রাশেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
তাঁর জামিনের বিষয়টি জানা জানি হওয়ার পর বুধবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে আদালত প্রাঙ্গনে যান। এসময় আদালত প্রাঙ্গনে বিচারকের প্রত্যাহারের দাবি জানান। এসময় বক্তব্য প্রদানকারি শিক্ষার্থী ও আইনজীবীরা বলেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে গিয়ে বিচারকরা ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে জামিন প্রদান করছেন। এতে তাদের দ্রুত পুনঃবাসন সুযোগ হবে। তাই বিচারকের প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, রাশেদ যে ৩ টি মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয় ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন তিনি। একই সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে রাশেদ গুরুতর অসুস্থ বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে। সব বিবেচনায় আদালত এই মামলায় রাশেদেকে তাঁর (আবুল কালাম সিদ্দিকী) জিম্মিয় জামিন প্রদান করেন। এটা ন্যায় বিচারের অংশ।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগৈর আমলে আমি নিজেও মামলার আসামি হয়েছে কারাভোগ করেছি। অ্যাডভোকেট মান্নানসহ আর অনেক আইনজীবী নিজেও কারাভোগ করেছেন। ওই সময় আমাদের জামিনের ক্ষেত্রে বিচার ব্যবস্থায় নগ্নহস্তক্ষেপ করা হয়েছিল। এখন আবারও তার করা যাবে না। বিচারিক ব্যবস্থাকে আইনের গতিতে চলতে দিতে হবে। বুধবার কর্মসূচির কারণে আদালতের কার্যক্রম বিলম্বে শুরু হয়েছে।