parbattanews

কক্সবাজারে ঈদের কেনাকাটায় সব ধরনের ক্রেতার ভীড়

রোদ, প্রচণ্ড গরম, হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি। যানজট তো আছেই। তবে এতে কোনো ছেদ পড়েনি ঈদের কেনাকাটায়। শুক্রবার পর্যটন শহর কক্সবাজারের বিভিন্ন বিপণীবিতান এলাকায় গিয়ে ক্রেতাদের ভীড় দেখে মনে হচ্ছে, ঈদের বেশি বাকি নেই।

তবে বরাবরের মতো অভিযোগ যানজট নিয়ে। মানুষের নিত্য সময় চলে যায় গাড়িতে। আর শপিং করবে কখন। এভাবে কি চলে শপিং এখন ক্রেতাদের হাজারো প্রশ্ন ? বিক্রেতার আবার একটি নতুন প্রশ্ন জেগেছে-কক্সবাজারে মূলত পুর্বে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অবাধ বিচরণ ছিল বিভিন্ন এলাকায়। যা শপিং করতে এসে বুঝা যেত। কিন্তু এবার সেই অংশটি বাজারে দেখা যাচ্ছেনা। ইয়াবা কারবারী ও তাদের স্বজনরা নিজেদের ইচ্ছেমত ক্রয় করতো বিভিন্ন মালামাল। ফলে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হতো।

শহরের নিউমার্কেট, সুপার মার্কেট, ছালাম মার্কেট, ফিরোজা মার্কেট, পানবাজার রোডের বিভিন্ন মার্কেট এখন ক্রেতার ভীড়ে সরগরম। বিক্রেতাদের দাবি, শহরের অন্যান্য এলাকার তুলনায় এসব স্থানে জিনিসপত্রের দাম তুলনামুলক কম। বাচ্চাদের জামাকাপড়, খেলনা, জুতা, কানের দুল, গলার মালা, চুড়ি, টিপ, চুলের ব্যান্ড, হাঁড়ি-পাতিল, টেবিল ক্লথ, চাদর, কুশন, মেয়েদের টপস, ওড়না, প্যান্ট, ছেলেদের পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্ট, টি-শার্ট, ট্রাউজারসহ হরেক রকম জিনিসের পসরা সাজানো। এই মার্কেটগুলোতে উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন আয়েরসব ধরনের ক্রেতাদের বিচরণ। পার্থক্য শুধু কেনাকাটার ধরনে।

শহরের বৈদ্যঘোনা এলাকার আরফাত হোসাইন বলেন, ঈদের বাজার বলে কথা। ছালাম মার্কেট ও পান বাজার রোড এলাকায়  না এলে তো মনে হয় বাজার করাই হলো না। ঈদের বাজার মানে তো আর শুধু শাড়ি, জামা কেনা নয়-এর সঙ্গে লাগে নানান কিছু। আর ঘর সাজাতে বিছানার চাদরসহ টুকটাক কত কিছু কিনতে হয়।

তিনি বলেন,  এবার মার্কেটগুলোতে ঈদ উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ফলে কেনাকাটা করা যাচ্ছে অনেকটা নিশ্চিন্তে। বখাটের উৎপাতও কম এ পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কক্সবাজারে পবিত্র মাহে রমজানের দিন যতো গড়াচ্ছে সময় যেন ততোই ফুরিয়ে আসছে। শপিংমল ও বিপনীবিতান গুলোতে জমজমাট হয়ে উঠছে ঈদের কেনাকাটা। শহরের বিভিন্ন শপিংমল ও বিপনীবিতান গুলোতেও উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা যাচ্ছে। সকাল থেকেই শহরের সালাম মার্কেট, ফিরোজা শপিং কমপ্লেক্স, ফজল মার্কেট, শফিক সেন্টার, সী-কুইন মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, নিউ মার্কেট, বার্মিজ মার্কেট, কবির মার্কেট ও আপন টাওয়ারসহ হকার মার্কেট এর দোকানগুলোতে বেশি চোখে পড়ে।

মূলত কক্সবাজার এর ঈদ বাজারে দু’ধাপে মার্কেটগুলোতে বিক্রি হয়। দিনে প্রায় পুরো সময়টা দুরের ক্রেতারা বাজার দখল করে রাখে। স্থানীয়রা এবং ব্যবসা বা চাকরী সূত্রে যারা এ জেলায় বাস করেন এ উচ্চবিত্ত ক্রেতারা মার্কেটে আসেন সন্ধ্যার পরে। বাহারি পোশাক আর নতুন ডিজাইনের পোশাকের পসরা সাজিয়ে দোকানীরা ক্রেতা আকর্ষণ করছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে আরো দেখা গেছে, রমজানের প্রথম দিকে শপিংমলগুলোতে ক্রয়-বিক্রয় কম থাকলেও বর্তমানে শপিংমল ও বিপনীবিতানগুলোতে প্রচুর পরিমান ভীড় লক্ষ করা যাচ্ছে। ক্রেতাদের ভীড় সামাল দিতে অনেক মার্কেটেই দোকানিদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে।

মনে রেখ বস্ত্র বিতানের মালিক মহিউদ্দিন ভুট্টো বলেন, ঈদের বিক্রি ভালোই। তাঁর দোকানের থ্রি-পিস ভালোই বিক্রি হচ্ছে। এখন মূলত বিভিন্ন এলাকার পাইকারেরা পোশাক কিনে নিচ্ছেন। কম আয়ের ক্রেতারও ভিড় আছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বেচা-কেনা হচ্ছে। সামনে আরো ভালো ব্যবসা হবে।

শহরের বহুল আলোচিত অভিজাত মানের নক্ষত্র ফ্যাশনের পরিচালক আবদুর রহিম জানান, আমাদের এখানে দেশি-বিদেশি হরেক রকম পোশাকের বিপুল সমারোহ রয়েছে। গত ক’দিনে বিক্রি অনেক বেড়েছে। বিক্রি ভালোই হচ্ছে।

নিরাপত্তার সার্বিক বিষয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে নিয়মিত।
এব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, ক্রেতাসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য স্পেশাল বাহিনী মাঠে কাজ করছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।

Exit mobile version