কক্সবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ১ লক্ষ পরিবারকে সহায়তা দিবে ডব্লিউএফপি
কক্সবাজারের আটটি উপজেলায় কোভিড-১৯ ও লকডাউনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ১ লক্ষ পরিবারকে (পরোক্ষভাবে সুবিধাভোগী প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ) ডব্লিউএফপি’র পক্ষ থেকে ২৫০০ টাকা করে নগদ অর্থ-সহায়তা দেওয়া হবে।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যেসব পরিবার সবচেয়ে ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে ও যারা ইতোমধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বা সোস্যাল সেফটি নেট কর্মসূচির আওতায় আসেনি, তাদেরকে এই নগদ অর্থ-সহায়তা দেওয়া হবে।
গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাসে বাস্তবায়িত এসএসএইচসি কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৬ লক্ষ মানুষকে ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৫৯ কোটি ২২ লক্ষ টাকা) নগদ অর্থ-সাহায্য দেওয়া হয় ও তার পাশাপাশি আইসোলেশন অথবা কোয়ারেন্টিন সেন্টারে থাকা মানুষদেরকে খাদ্য-সহায়তা ও হট মিল বা খিচুড়ি দেওয়া হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার-কর্তৃক ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বা সোশ্যাল সেফটি নেট কর্মসূচির পরিপূরক হিসেবে ডব্লিউএফপি ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এই কর্মসূচি সাজিয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) জেলা প্রশাসন ও জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) স্পেশাল সাপোর্ট ফর দ্যা হোস্ট কমিউনিটি (এসএসএইচসি) কর্মসূচি পুনরায় চালু করেছে। এই কর্মসূচির উদ্বোধনীতে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ডব্লিউএফপি ও এর অংশীদার সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে মানুষের কাজের সুযোগ কমে যাওয়ার এই সময়টায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে বদ্ধপরিকর। সংকটময় পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে এগিয়ে আসায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে (ডব্লিউএফপি) আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান ডিসি মো. মামুনুর রশীদ।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপি’র প্রতিনিধি রিচার্ড রেগান বলেন, “কোভিড-১৯ এর ফলে কক্সবাজারে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা পরিবারগুলোর জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেসব মানুষের আমাদের সহায়তা সবচেয়ে বেশী দরকার, তাদের পাশে সরকারের অগ্রাধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দাঁড়াতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
কানাডা সরকারের অনুদানে এই এসএসএইচসি কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে এবং জেলা প্রশাসন, কক্সবাজারের সহযোগিতায় ডব্লিউএফপি ও স্থানীয় অংশীদারদের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো.আমিন আল পারভেজ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ ও কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-. ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইটা সোয়েট, আইসিজির প্রতিনিধি অর্জুন জাইন, ইউনিসেফের প্রতিনিধি এজাদ উল্লাহ মাজেদী, আইওএম এর প্রতিনিধি ম্যানুয়েল পেরেরা, এফএও এর প্রতিনিধি শেফার্ড, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার জুবায়ের হাবিব।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ২০২০ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী একটি সংস্থা। আমরা বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানব হিতৈষী সংস্থা, যা জরুরি অবস্থায় জীবন রক্ষা করে চলেছে এবং খাদ্য সহায়তার মাধ্যমে সংঘাত, দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করছে।