parbattanews

কক্সবাজার আদালতের মালখানার করুনদশা

কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নীচ তলার পূর্বে বিআরটিএ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান অফিস। পশ্চিমে জেলা তথ্য অফিস। তারপাশে কোর্ট ইন্সপেক্টরের কার্যালয়। গুরুত্বপূর্ণ ৪টি অফিসের মাঝখানে কোর্ট মালখানা। এই মালখানার করুণদশা। দুর্গন্ধ! সামনে নাক চেপে ধরে হাঁটতে হয়।

যে কোন সময় ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। যার ফলে মামলায় জব্দকৃত আলামত প্রদর্শন, যাচাই-বাছাইয়ের অভাবে মামলার স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মূলত, স্থান সংকটের কারণেই এমন অবস্থা বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, মালখানার সমস্যা নিরসনে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, মালখানার ইনচার্জ, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বা তার প্রতিনিধি এবং কোর্ট ইন্সপেক্টরকে সদস্য রাখা হয়েছে।

সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ বিষয়ে করণীয় জানিয়ে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলেন জেলা জজ।

আইনজীবীরা বলছেন, বিচার বিভাগের স্বার্থে দ্রুত মালখানা সম্প্রসারণ করা অপরিহার্য। অথবা বিকল্প কোথাও সরিয়ে নেওয়া দরকার। না হয়, রক্ষিত মালামাল নষ্ট হয়ে যাবে।

কোন আলামত নষ্ট হলে বিচার প্রক্রিয়া চরমভাবে ব্যাহত করতে পারে বলে আইনজীবীরা মন্তব্য করেছেন।

কোর্ট মালখানার দায়িত্বরত পুলিশ ইন্সপেক্টর আমিন কাদের খাঁন জানান, মালখানায় স্তুপের উপর স্তুপ। জায়গার অভাবে অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মামলার অনেক আলামতের আকার, ধরন, রং, গুণাগুণ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ধাতব আলামত মরিচা ধরে বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। নগদ টাকাগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অনেক আলামত পোকায় খেয়ে ফেলছে।

মালখানায় রক্ষিত অন্তত নগদ টাকাগুলো আইনি বিধি বিধান অনুসরণ করে ব্যাংকে জমা করার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান ইন্সপেক্টর আমিন কাদের খাঁন।

কোর্ট মালখানার ইনচার্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম জানান, মালখানায় প্রবেশ করতে হলে অনেকটা সেখানে থাকা মালামালের উপর পা দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। মালামালের স্তুপের জটে মালখানার অবস্থা এত প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, সেগুলো সরানো কিংবা নাড়াচাড়া করার কোন সুযোগ নেই।

এদিকে, গত ১২ নভেম্বর বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে মালখানার বিষয়ে কথা বলেন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) রাজিব কুমার বিশ্বাস।

তিনি বলেন, কোর্ট মালখানার পরিসর খুব সহসায় বাড়ানো দরকার। মালখানায় মাত্র তিনটি কক্ষ। মালামাল রাখার আর কোন জায়গা নেই। প্রয়োজনে বারান্দায় গ্লাস ফিটিং করে হলেও সাময়িকভাবে মালখানার কক্ষের পরিধি বাড়ানোর জন্য তিনি প্রস্তাব করেন।

Exit mobile version