parbattanews

কক্সবাজার জেলায় ৪১৩ গ্রাম প্লাবিত, মৃত্যু ১৮

কক্সবাজার জেলায় ভারি বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। পাহাড় ধসের পাশাপাশি নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্থানে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় দুই লাখ মানুষ। বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি ও খেতখামার।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, জেলার ৪১ ইউনিয়নের ৪১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দিনদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

গত দুইদিনে পাহাড় ধস ও পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। সেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ জন, উখিয়ায় একজন, টেকনাফে একই পরিবারে ৫জনসহ ৬ জন এবং মহেশখালী ২ জন।

ঢলের পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে ও স্রোতের টানে নিখোঁজ হয় ৭ জন। সেখান থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধার করে ডুবুরিরা।

টানা ভারি বর্ষণে জেলার গ্রামীণ সড়কগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যায় এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫১ হাজার ১৫০টি পরিবার।

এছাড়াও কক্সবাজার জেলার পার্শ্ববর্তী পার্বত্য উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে মারা গেছেন দুই জন। এ নিয়ে গত দুই দিনে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার প্রধান নদী বাঁকখালী ও মাতামুহুরীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ও বুধবার জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার সদরে ১১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে। গত ২৪ ঘণ্টায় টেকনাফে ৩২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলায় ১২৫, মহেশখালী উপজেলায় ১৩২ মিমি বৃষ্টির রেকর্ড হয়েছে।

এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ১৫০ মে. টন চাল ও ৫ লক্ষা টাকা বরাদ্দ করেছে জেলা প্রশাসন।

পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া অব্যাহত রয়েছে। বুধবার সকাল থেকে কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া, বাদশাঘোনা, রাডার স্টেশন ও সার্কিট হাউজের পাহাড়ের নিচের এলাকায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সচেতনতা অভিযান পরিচালিত হয়। উপজেলা পর্যায়েও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। পৌরসভার উদ্যোগে গঠন করা হয়েছে বিশেষ টিম।

পানিবন্দী ও পাহাড়ে বসবাসরত ঝুঁকিতে থাকা ৭০৬৫ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে ও হচ্ছে। তাদেরকে রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। ৮০০০ বেশি স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। পুলিশসহ অন্যান্যরা সহযোগিতা করছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।

বিভাগীয় কমিশনার কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। তিনি সার্বিক পরিস্থিতি দেখছেন ও পরামর্শ দিচ্ছেন।

Exit mobile version