৬০ শতাংশের নেই পরিবেশ ছাড়পত্র

কক্সবাজার জেলায় ৫৪ ইটভাটা চলছে গায়ের জোরে!

fec-image

বায়ু দূষণ রোধ, নিষিদ্ধ এলাকায় ভাটা স্থাপন, পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই অধিকাংশ ইটভাটার। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর বন্য হাতির অভয়ারণ্য ধ্বংসসহ পাহাড় ও গাছ কেটে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে অনেক ইটভাটা। যেগুলো টিকে আছে রাজনৈতিক প্রভাবসহ বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে।

কক্সবাজার জেলায় এমন ৫৪টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা প্রস্তুত করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। যেগুলোতে পোড়ানো হয় বনের কাঠ। নিয়োজিত আছে রোহিঙ্গা ও শিশু শ্রমিক।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় ১৮১টি ইটভাটা রয়েছে। তার মধ্যে কক্সবাজারের ৮ উপজেলায় ১৩০টি। সেখানে ৬০ শতাংশের কোন পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। উচ্চ আদালতে মামলা করে চালাচ্ছে এসব ইটভাটা।

কক্সবাজার সদরে ২৭টি ইটভাটায় ১৭টি, রামুর ৪০টিতে ২৫টি, পেকুয়ার ৭টির মধ্যে ৪টি, চকরিয়ার ৫২টির মধ্যে ৩৬টি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই।

উখিয়া-টেকনাফের অধিকাংশ ইটভাটা চলছে অনেকটা গায়ের জোরে। কুতুবদিয়ার ১টি ও মহেশখালীর ১টি ইটভাটা চলছে দায়সারাভাবে।

এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে গত ২০ নভেম্বর সুপারিশ আকারে ঢাকায় চিঠি প্রেরণ করেছে পরিবেশের কক্সবাজার অফিস।

অবৈধ ইটভাটাসমূহ হলো, কক্সবাজার সদরের পূর্ব খরুলিয়ার শফিউল হক চৌধুরীর মেসার্স এমএস ব্রিক ফিল্ড ও এমএসব্রিকস ম্যানুফেকচারিং, পিএমখালীর বাংলাবাজারের বজল আহমেদ কোম্পানির বজল এন্ড ব্রাদার্স ব্রিক, চৌফলদন্ডীর হুমায়ুন সিকাদারের মেসার্স আরকেসি ব্রিক, ইসলাবাত ওয়াহেদের পাড়ায় দিদারুল ইসলামের মেসার্স দিবা ব্রিকস, খোদাইবাাড়ির জসিম উদ্দিনের কক্স ইন এসোসিয়েট ব্রিকস, ভোমরিয়াঘোনার রশিদ আহমদের (বাবুল কোম্পানির) আর এমএম ব্রিকস, ঈদগড় ধলিরছড়ার ইয়াসিন পারভেজ চৌধুরীর মেসার্স এইচবিএম ব্রিকস, চৌফলদন্ডীর রেজাউল করিম সিকদারের আরকেসি ব্রিকস, খরুলিয়ার আফরোজা সুলতানার মেসার্স এমএসআর ব্রিকস।

রামু মেরংলোয়ার আলহাজ্ব ছাবের আহমদের আল হেরাম ব্রিকস, ফতেখারকুলের মো. জাহাঙ্গির হোসেনের মেসার্স জেডএসটি ব্রিকস, খুনিয়াপালং এর মো. শাহ আলমের মেসার্স এমআরসি ব্রিকস, মধ্যম খুনিয়াপালং মোস্তফা আলমের মেসার্স এসএসবি-২ ব্রিকস, ফতেখারকুল ফরিদুল আলম/জাফর আলমের মেসার্স জেডএন্ডএফ ব্রিকস, মোস্তাক আহমদের মেসার্স এসএসবি ব্রিকস, শাহ আলম চৌধুরীর মেসার্স সাবরিনা ব্রিকস, ধোয়া পালং কালু চেয়ারম্যানের মেসার্স ভাই ভাই ব্রিকস, উখিয়ারঘোনার মেসার্স সাসকো অটো ব্রিবস, খরুলিয়া জাসমাল হোসেনের মেসার্স বিবিএম ব্রিকস, ধলিরছড়ার ওয়াহিদুজ্জামানের মেসার্স জামান এন্ড ব্রাদার্স, ধোয়াপালং এর হাবিবুল ইসলামের মের্সাস এইচএএম ব্রিকস, দক্ষিন খুনিয়াপালং এর মো. শাকেরের মেসার্স রায়ান ব্রিকস, উখিয়ারঘোনার জাহাঙ্গীর আলমের মেসার্স এরআমএল ব্রিকস, মেরংলোয়ার কামাল মোস্তফার মেসার্স এমকে ব্রিকস, গয়ালমারার শামসুল আলমের মেসার্স এসবিএম ব্রিকস।

চকরিয়ার উত্তর হারবাং সামসুল আলমের এলবিএম ব্রিকস, আরিফ উদ্দিনের মেসার্স আশিক ব্রিকস, ফাঁসিয়াখালীর গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মেসার্স জিএলবি ব্রিকস, গয়ালমারার শামসুল আলম কোম্পানীর মেসার্স এবিএম ব্রিকস, উত্তরমানিকপুরের শাহাব উদ্দিনের মদিনা ব্রিকস, মানিকপুরের মাহমুদুল হকের আল মদিনা ব্রিকস-২ এবং এবিএম ব্রিকস, উত্তর মানিকপুরের শাহ আলমের ডায়মন্ড ব্রিকস, রুমখাপালং মো. শাহ আলমের মিডিয়া ব্রিকস ফিল্ড, পাগলির বিল হলদিয়া পালং সৈয়দ উল্লাহর জিএমএস ব্রিকস, থাইং খালীর কেআরবি ব্রিকস, হ্নীলার আলী আহমদের মেসার্স জিয়াউর রহমান ব্রিকস, দৈংগাকাটার মো. আবুল হাশেমের মেসার্স এ হাশেম ব্রিকস, উত্তর হ্নীলার মো. আবদুল্লাহর মেসার্স এ আরবি ব্রিকস ও মেসার্স সালমান ট্রেডিং ব্রিকস, মীর কাশেমের মেসার্স এমকেবি ব্রিকস, হোয়াইক্ষং মো. হাশেমের মেসার্স এএইচবি ব্রিকস, রঙ্গীখালীর মো. শাহজাহান মিয়া চেয়ারম্যানের ফোর স্টার ব্রিকস, লতিয়া খোলার মেসার্স এমআরবি ব্রিকস, হোয়াইক্ষং কবির আহমেদ চৌধুরীর মেসার্স পিবিসি ব্রিকস, টৈটং হাজিরবাজার এলাকার আলহাজ্ব আহমেদ নবীর মেসার্স এবিএম ব্রিকস, কুতুবদিয়া কৈয়ারবিলের মো. শামসুল আলমের মেসার্স এসএ ব্রিক ফিল্ড।

অবৈধ ইটভাটা বন্ধের পদক্ষেপ বিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ৫৪টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা করে ঢাকায় এবং জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেছি। ঢাকা থেকে ইতোমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি অভিযানে জরিমানা করেছেন।

তিনি বলেন, ভাটার লাইসেন্স অথরিটি জেলা প্রশাসকের। তিনি চাইলে লাইসেন্স বাতিল করতে পারেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর ঈদগাঁও বাস স্টেশনের দক্ষিণ পার্শস্থ আরকেসি ব্রিকস এবং ইসলামাবাদ খোদাইবাড়ীর দিবা ব্রিকস নামে ২টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা মো. জাকারিয়া।

এ সময় ভাটা দুইটির মালিককে এক লাখ বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সাথে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা না করতে সতর্ক করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইটভাটা, কক্সবাজার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন