কক্সবাজার পৌর নির্বাচন: নৌকার ‘চ্যালেঞ্জ’ মোজাম্মেল পরিবার

কক্সবাজার জেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা ও বিস্তৃতিতে মরহুম এ.কে.এম মোজাম্মেল হকের ভূমিকা ছিল অনন্য। তিনি ছিলেন দলের আমৃত্যু সভাপতি। তার ছেলে সন্তানেরাও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। শুধু পৌর নির্বাচন ইস্যুতে একে একে ৪ সন্তান ও এক মেয়েকে বলি হতে হলো। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার হয়েছেন মাসেদুল হক রাশেদ।
তার সূত্র ধরে একে একে বহিষ্কার হলেন জেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সোহেল, আওয়ামী লীগ নেতা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল হক মার্শাল এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল। ভাই মামেদুল হক রাশেদের নির্বাচন করতে পদত্যাগ করেছেন জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী তাহমিনা চৌধুরী লুনা।
তাদের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম মোজাম্মেল হক ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সময়ের নেতা এবং দীর্ঘদিনের কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। কক্সবাজার পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৫ সালের ১০ মে তিনি মারা যান।
বলতে গেলে, আওয়ামী লীগের জন্মদাতা পরিবার এখন আওয়ামী লীগের কেউ নয়! তারা সবাই দলের চোখে ‘দলীয় শৃংখলা ভঙ্গকারী।’ এই মোজাম্মেল পরিবারই এখন নৌকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। পুত্রবধূরাও সমানতালে নির্বাচনের মাঠ গরম করে রেখেছেন। ভোটযুদ্ধে অনেক এগিয়ে।
কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী। আগামী ১২ জুন এই নির্বাচন। স্বতন্ত্র হয়ে ভোটযুদ্ধে আছেন মাসেদুল হক রাশেদ। এই দুই প্রার্থীর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জমে গেছে নির্বাচন। তারা ছাড়া রয়েছে মেয়র পদে রয়েছেন আরো ৩ প্রার্থী। তারা হলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাহেদুর রহমান, স্বতন্ত্র জগদীশ বড়ুয়া পার্থ ও মাসেদুল হক রাশেদের স্ত্রী জোসনা হক।
এদিকে, নৌকাকে জেতাতে কেন্দ্রীয় নেতারা কক্সবাজার এসে দফায় দফায় বৈঠক, সমাবেশ করেছেন। নেতাকর্মীদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগ, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের শতাধিক নেতা বহিস্কারও করেছে। তবু থামানো যাচ্ছে না তাদের। স্বতন্ত্র প্রার্থীর নারিকেল গাছের পাল্লা ভারি। আওয়ামী লীগের নেতারাই নৌকার ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ মোজাম্মেল পরিবার, এমনটি মনে করছে পৌরবাসী।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের দেয়া সর্বশেষ তথ্য বলছে, পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ডের ৯৪ হাজার ৮১১ জন ভোটার রয়েছে। যেখানে পুরুষ ভোটার ৪৯ হাজার ৮৮৫ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ৪৪ হাজার ৯২৬ জন। ৪৩ টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে।