parbattanews

কবর খুঁড়ে ও মৃত মানুষকে গোসল করিয়ে তৃপ্তি পায় পানছড়ির সুলতান

মানুষ মরার খবর পেলেই নিজ পকেটের টাকা খরচ করে ছুটে চলে সুলতান। তবে কোন টাকা-পয়সার বিনিময়ে নয় সম্পুর্ন স্বেচ্ছাশ্রমে মৃত মানুষকে গোসল ও কবর খোঁড়ার কাজ করে থাকেন।

মো. সুলতান মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত মো. আনু মিয়ার ছেলে। মৃত মানুষকে গোসল ও খবর খুঁড়েই নিজ মনে শান্তি পান বলে জানায় সুলতান। তবে বিনিময়ে কেউ কিছু দিতে চাইলে মনে খুব কষ্ট পায়। জোর করে কাপড়-চোপড় দিলেও একেবারে গরীবদের মাঝে তা বিলি করে দেন।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত তিন শতাধিক মৃত মানুষকে গোসল ও তিন সহশ্রাধিক কবর খুঁড়ার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন। তাছাড়া কেউ মারা গেলে দাফনের কাপড় কেনার টাকা না থাকলে পানছড়ি বাজারের একটি দোকানে সব সময় একজনের দাফনের কাপড়ের টাকা তিনি জমা রাখেন। যা চলে বছরের পর বছর।

পানছড়ি উপজেলা ভিডিপি সদস্য সুলতানের বর্তমান বয়স ৫৫। তার ভয় যে কোন মুহুর্তে নিজেও মারা যেতে পারে। তাই উত্তরসুরী হিসেবে একজন তৈরি করে যাচ্ছেন যাতে সেবাটা অব্যাহত থাকে।

পানছড়ি গাউসিয়া নার্সারীর সত্বাধিকারী মো. আবদুল হালিম জানান, তার এক আত্মীয় মারা যাওয়ার পর সুলতান স্ব-ইচ্ছায় গিয়ে গোসল ও কবর খোঁড়ার কাজ সম্পন্ন করে। বিনিময়ে অনেক কিছু দিতে চাইলে সে খুব রাগ করে। পরে একটি লুঙ্গি ও পাঞ্জাবীর কাপড় জোর করে দিলেও সাথে সাথে একজন গরীব লোককে ডেকে দিয়ে দেয়।

উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসে কর্মরত হাবিলদার মো. সুবেদ আলী জানায়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় খবর পেলেই সে ছুটে যায়। মানুষকে ধোয়া ও কবর খোঁড়ার কাজ করা বাড়িতে দাওয়াত পর্যন্ত খায়না। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি বাহিনীর এই গর্বিত সদস্য করোনায় কেউ মারা গেলে তাদের গোসল করানোর ব্যাপারেও স্বেচ্ছায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ।

৩নং পানছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন জানান, বর্তমান যুগে এমন লোক খুব বিরল। সদা হাস্যেজ্জ্বল লোকটি যে কাজ করে যাচ্ছে আসেলই একটি নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত। সে শুধু পানছড়ির নয় সারা দেশের জন্য একটি আইডল বলা চলে।

Exit mobile version