parbattanews

করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি অলস ব্যক্তিদের!

করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রায় ৫০ হাজার ব্যক্তির মধ্যে গবেষণা করে ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিন জানিয়েছে যে, যারা ব্যায়াম বা কোনো ধরনের শারীরিক কাজ করেন না তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে উচ্চ মৃত্যু ঝুঁকি ও অধিক গুরুতর অবস্থা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিনে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেন, মহামারির আগে কমপক্ষে দু’বছর যারা শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিল তাদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, গুরুতর অবস্থা হওয়া কিংবা মারা যাবার সংখ্যা বেশি। করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগিদের ঝুঁকির কারণ হিসেবে বয়সের পাশাপাশি শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনও আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ধূমপান, অধিক স্বাস্থ্য বা উচ্চ রক্তচাপের সাথে তুলনা করলে করোনাভাইরাস আক্রান্তের পিছনে “শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাই সবচেয়ে শক্তিশালী ঝুঁকির কারণ”। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে যাদের অবস্থা গুরুতর হয়েছে তাদের প্রায় সবাই অধিক বয়স্ক, পুরুষ এবং ডায়াবেটিস, স্থূলত্ব বা হৃদরোগে আক্রান্ত।

শারীরিক ব্যায়ামের অভাবে আক্রান্ত হয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি হওয়া কিংবা মৃত্যু হার বেড়েছে কিনা তা জানতে গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮ হাজার ৪৪০জন প্রাপ্তবয়স্ক কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগিকে পর্যবেক্ষণ করেন। রোগীদের গড় বয়স ছিল ৪৭ এবং এদের পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই ছিলেন নারী। তাদের প্রত্যেকের ওজন গড়ে প্রান্তিকের উপরে ৩১ শতাংশ ছিল।

প্রতিটি ব্যক্তিই ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত নিজেদের সব ধরনের ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করেন। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী দেখা যায়, শারীরিকভাবে অলস ও কর্মবিহীন ব্যক্তি, শারিরীকভাবে কর্মব্যস্ত ও সচল ব্যক্তির তুলনায় দ্বিগুণ হারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, কর্মহীন প্রায় ৭৩% ব্যক্তিদের নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হয়েছে। এবং এদের মৃত্যুহার ও কর্মক্ষম ব্যক্তিদের তুলনায় আড়াই গুণ বেশি।

আবার দেখা যায়, মাঝেমধ্যে টুকটাক ব্যায়াম বা কাজ করা ব্যক্তিদের তুলনায় অলস ব্যক্তিদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। যাদের ১০ শতাংশেরই আইসিইউ’তে পরিচর্যার প্রয়োজন হয়েছে এবং ৩২ শতাংশের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি।

গবেষণাটি এখনও অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়নি। তাই এই ফলাফল কতটুকু সঠিক তা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। তবে গবেষকেরা এ বিষয়ে আরও বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করছেন।

Exit mobile version