কক্সবাজারে করোনার সেকেন্ডওয়েভ মোকাবেলার প্রস্তুতি : ১০ লাখ মাস্ক বিতরণ করবে জেলা প্রশাসন
শীতে করোনার প্রভাব বাড়ার আশঙ্কা থেকে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এ জন্য সার্জিক্যাল মাস্কে অনুৎসাহিত করে কাপড়ের তৈরি ১০ লাখ মাস্ক বিতরণের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির পাশাপাশি বেসরকারিভাবে মাস্কগুলো সংগ্রহ করা হবে। করোনা মোকাবেলায় আগেভাবে চালানো হচ্ছে সতর্কতামূলক প্রচারণা।
ইতোমধ্যে শহরের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী এই তিন পয়েন্টে বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়েছে। মাস্ক না পরে সমুদ্র পাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসন। জরিমানার পাশাপাশি মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। করোনা সতর্কতা সৃষ্টির জন্য কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশও।
তবে, প্রশাসনের কড়াকড়ির পরও জনসমাগম কোনমতেই কমছে না। বেশীরভাগ মানুষ মাস্কবিহীন চলাফেরা করছে। হাটবাজারে প্রচুর ভিড়। যানবাহনে স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) করোনা মোকাবেলায় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে, কোস্ট ট্রাস্ট নামক দেশীয় একটি সংস্থা কক্সবাজার শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করতে দেখা গেছে।
করোনা মোকাবেলায় সতর্কতা ও করণীয় সম্বলিত ৭০ হাজার প্রচারপত্র বিলি করার ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী রেজাউল করিম চৌধুরী। সেই ঘোষণা অনুযায়ী সভা করে মাঠকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন সহকারি পরিচালক ও আঞ্চলিক টিম লিডার জাহাঙ্গীর আলম।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছেন, করোনার সেকেন্ডওয়েভ মোকাবেলায় তাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি দুই দফা বৈঠক করে করণীয় চূড়ান্ত করেছে। জেলায় বিনামূল্যে দশ লাখ মাস্ক বিতরণ ও উপজেলাভিত্তিক প্রচারণা করা হবে। ইতোমধ্যে ১ লাখ মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সার্জিক্যাল মাস্কে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে, তাই কাপড়ের তৈরি মাস্কের প্রতি উৎসাহিত করা হচ্ছে।
তিনি জানান, করোনা সতর্কতা সৃষ্টিতে জেলাব্যাপী মোবাইলকোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে গঠিত টিম প্রতিদিন মাঠে যাচ্ছে। একইভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণও কাজ করছেন।
ডিসি মো. কামাল হোসেন জানান, আবাসিক হোটেল মালিকদের সাথে বৈঠক করে তাদের করণীয় জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপরও যারা নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে জেল, জরিমানা করবে প্রশাসন। আদেশ অমান্যকারী আবাসিক হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তও রয়েছে জেলা প্রশাসনের।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা: অনুপম বড়ুয়া জানান, এ পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনা পরীক্ষা করা হয় প্রায় ৬৮ হাজার। সেখানে পজিটিভ ধরা পড়েছে প্রায় ৬৭ হাজার। মারা গেছেন ৮১ জনের মতো।
সর্বশেষ ২৫ নভেম্বর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৬৫৭ স্যাম্পল টেস্টের মধ্যে ২৩ জনের রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ আসে।