parbattanews

করোনা আক্রান্ত দরিদ্র পরিবারের পাশে চকরিয়া ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে পাল্টে গেছে প্রতিটি মানুষের জীবনমান। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের চিত্র তার ব্যতিক্রম নয়। জাতির এই সংকটময় মুহূর্তে প্রাদুর্ভাব শুরু থেকে মানবতার সেবায় অবিরাম ছুটে চলেছেন কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াবুল হক।

সরকারি নির্দেশনা মতে অঘোষিত লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে দরিদ্র, দিনমজুর, কর্মহীন, সুবিধা বঞ্চিত ও করোনা আক্রান্ত অসহায়দের পরিবারের মুখে খাবার দিতে প্রতিনিয়িত খাদ্য সহায়তা ও উপহার সামগ্রী নিয়ে তিনি সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন জনপদের অলি-গলিতে।

স্থানীয়দের মতে কাউন্সিলর জিয়াবুল হক শুধু মানবিক জনপ্রতিনিধি না যেনো এক মানবতার ফেরিওয়ালা। তিনি ইতিমধ্যে চকরিয়া পৌরসভায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত দরিদ্র পরিবার ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১৫ হাজার কর্মহীন জীবিকা হারানো পরিবারের মাঝে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে খাদ্য সহায়তা, উপহার সামগ্রী ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন ।

নির্দিষ্ট একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেও তিনি পুরো পৌরসভায় খাদ্য সহায়তা বিতরণ করে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন। তার এই খাদ্য সহায়তা বিতরণও করা হয়েছে ব্যতিক্রমী উপায়ে। কোনো ধরণের জনসমাগম ছাড়াই বাড়ি বাড়ি গিয়ে নীরবে কর্মীর মাধ্যমে পৌরসভার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ও অলি-গলিতে এই খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন।

খাদ্য সহায়তা তুলে দেয়ার সময় কাউন্সিলর জিয়াবুল হক প্রচার বিমুখ থাকার জন্য নিজে একটি ছবিও পর্যন্ত ধারণ করেননি।

মানবিক এ জনপ্রতিনিধি সর্বশেষ শুক্রবার রাতে ও শনিবার(২৯ ও ৩০ মে) সকালে করোনা আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশণ ও আইসোলেটেড এ থাকা দরিদ্র পরিবারের পাশে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়া ৬নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিয়াবুল হক কাউন্সিলর হিসেবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেও তার নির্বাচনী ওয়ার্ড নিয়ে তিনি মোটেও ব্যস্ত নন। তিনি বর্তমানে পৌরসভার আওতাধীন নয়টি ওয়ার্ডস্থ বিভিন্ন জনপদের পাড়া-মহল্লায় সৃষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রমণ আক্রান্ত হওয়া পজিটিভ আসা অসহায় ও দরিদ্র রোগীর পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণে নিভৃতেই কাজ করে যাচ্ছেন।

এছাড়া ইতোপূর্বে বর্তমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পৌরসভার পাশাপাশি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে মানবিক সহায়তা হিসেবে গরিব, অসহায়, দরিদ্র, অস্বচ্ছল, এতিম, প্রতিবন্ধী, ক্যান্সার আক্রান্ত ও স্কুলসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ-মাদ্রাসা এবং এতিমখানা ছাড়াও সামাজিক নানা প্রতিষ্ঠানে প্রচার বিমুখ ছাড়া অসহায়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিরবে আর্থিক সহায়তা ও অনুদান প্রদান করেন।

করোনা আক্রান্ত দরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ প্রসঙ্গে চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর জিয়াবুল হক কাছে জানতে চাইলে বলেন, ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছিল দেশের মুক্তিকামী জনতা। স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হয়ে জাতির এ দুর্দিনে আমার যা কিছু আছে তা নিয়ে সংকটে পড়া দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে জীবিকা হারানো কর্মহীন দিনমুজুর ও আক্রান্ত পরিবারকে সহায়তা হিসাবে মানবতার সেবায় যতটুকু পারছি নিজে সুরক্ষা বজায় রেখে মানবকল্যাণে কাজ করছি। মানবতার সেবায় কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতেই হবে। আর এলাকার অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে এক অন্যরকম তৃপ্তি খুঁজে পাই।

ভোগের মাঝে সুখ নয় ত্যাগই হলো প্রকৃত সুখ। করোনার এই পরিস্থিতিতে বাইরে থাকি বলে পরিবার অনেক দুশ্চিন্তায় থাকে। এর মাঝেও দেশের মানুষের কল্যাণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। যেসব মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধবিত্ত পরিবার নিজেদের অস্বচ্ছল অবস্থা প্রকাশে সংকোচবোধ করছে এ ধরণের পরিবারকে খুঁজে বের করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের পরিবারকে খাদ্য সহায়তা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে।

করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু থেকে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে খাদ্য সামগ্রী সহায়তা অদ্যবদি পর্যন্ত মানুষের কল্যাণে অব্যাহত রেখেছি। যা পুরো জেলার মধ্যে অনন্য দৃষ্টান্ত ও বিরল বলে মনে করেন কাউন্সিলর জিয়াবুল।

তিনি এর চেয়ে আরো বড় পরিসরে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন তার জন্য পৌরবাসীর কাছে দোয়া ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।

Exit mobile version